শিরোনাম
\ এনামুল হক এনা \
পটুয়াখালী, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : মা ইলিশ রক্ষায় সরকারের বেঁধে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা চলাকালে উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীতে নৌকা ও জাল মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে মৎস্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এ নিষেধাজ্ঞা।
সরেজমিনে বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, নিষেধাজ্ঞার এ সময়কে বৃথা যেতে দিচ্ছেন না জেলেরা। তাদের ব্যস্ততা এখন ট্রলার ও নৌকা মেরামত, জাল সংস্কার, ইঞ্জিন সার্ভিসিং এবং রং করানোর কাজে।
আজ শনিবার দেশের বৃহত্তম মৎস্য বন্দর আলীপুর, মহিপুর ও কুয়াকাটা এলাকার জেলেপল্লী, বাউফলের নাজিরপুর ও কালাইয়া এবং ট্রলার মেরামতের ঘাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলেরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন ট্রলার ও নৌকা ঠিকঠাক করতে। কেউ আবার ভীষণ ব্যস্ত রং করানোর কাজে।
কুয়াকাটার মৎস্য ব্যবসায়ী লতিফ হাওলাদার বলেন, নিষেধাজ্ঞার এ সময়টা আমাদের জন্য প্রস্তুতির সুযোগ। আমরা এ সময়টাকে কাজে লাগাই। আমি ট্রলার ও জাল মেরামত এবং ইঞ্জিন সার্ভিসিংসহ সব কিছু ঠিক করছি, যেন নিষেধাজ্ঞা শেষে নতুন উদ্যমে মাছ ধরতে পারি। আর রঙও করে নিয়েছি ট্রলারে।
কুয়াকাটা জেলেপল্লীর আবদুস সামাদ ও আবদুর রহিম বলেন, টানা ২২ দিনের যে নিষেধাজ্ঞা চলছে, তা আমরা অবসরে অলস সময় হিসেবে পার করি না। আমরা এখন মাছ ধরতে না পারলেও যখন সময় পাই তখন ট্রলার মেরামত আর জাল ঠিক করি। নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেই আবার সাগরে নামতে হবে, তাই আগেভাগে সব কাজ গুছিয়ে নিচ্ছি।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের প্রজনন মৌসুমে টানা ২২ দিনের এ নিষেধাজ্ঞা ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও প্রজনন সুরক্ষায় বড় ভূমিকা রাখে। আর এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে বাজারে ইলিশের সরবরাহ ও দামে। উপজেলায় শতভাগ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এম এম পারভেজ বলেন, ইলিশের জন্ম ও বিস্তার রক্ষায় প্রজনন সময়ে মা ইলিশ রক্ষায় জেলেদের কার্যকরি ভূমিকা রাখতে হবে। আমরা উপজেলায় নিবন্ধিত জেলেদের ১৫০ মেট্রিক টন চাল দিয়েছি। তাছাড়া সার্বক্ষণিক টহল চলছে। ২৪ ঘণ্টা আমাদের টিম নদীতে পাহাড়া দিচ্ছে।
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউছার হামিদ বলেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে কেউ সমুদ্রে মাছ ধরতে গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইলিশ সংরক্ষণে নিষেধাজ্ঞার ফলে পরবর্তীতে এর সুফলে জেলেদের জীবনমান উন্নত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম এ বিষয়ে বাসস’কে বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় কোস্ট গার্ড, নৌপুলিশ ও মৎস্য বিভাগের টহল জোরদার করা হয়েছে। ইলিশ সংরক্ষণের এই উদ্যোগে সাময়িক কষ্ট হলেও দীর্ঘমেয়াদে মৎস্য উৎপাদন বাড়বে। সেক্ষেত্রে অভিযানের পাশাপাশি জনসচেতনতাও বাড়াতে হবে।