শিরোনাম

ঢাকা, ১৭ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : রাজধানীর ফরচুন শপিং মলে স্বর্ণের দোকানে চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনায় স্বর্ণাংকারসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
আজ শুক্রবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
শফিকুল ইসলাম বলেন, গত ৮ অক্টোবর দিবাগত রাতে মালিবাগের ফরচুন শপিং মলে শম্পা জুয়েলার্সে একটি চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মামলার পর ডিবি তদন্তে নামে। গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সাথে জড়িতদের সনাক্ত করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আসামিরা গত তিন মাস ধরে ফরচুন শপিং মলের স্বর্ণালংকার চুরির পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তারা বেশ কয়েকবার রেকি করে। চুরির উদ্দেশ্যে তারা হাতুড়ি, শাবলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম আগে থেকেই মার্কেটের পেছনে টিনের চালের নিচে লুকিয়ে রাখে। ঘটনার দিন দিনের বেলায় আসামি সুমন মার্কেটে প্রবেশ করে বাথরুমের জানালার গ্রিলে সুতার মাধ্যমে ‘ইউ’ লুপ তৈরি মাটি পর্যন্ত নামিয়ে বেঁধে রাখে এবং চুরির সময় নিজেদের মুখ ঢেকে রাখার জন্য বাথরুমে বোরকা রেখে আসে।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার দিন মধ্যরাতে আসামিরা গণপূর্ত কোয়ার্টারের ভেতর দিয়ে মার্কেটের পেছনে পৌঁছে। পূর্বে বাঁধা সুতার সঙ্গে দড়ি বেঁধে তারা ছাদে উঠে গ্রিল কেটে বাথরুমের ভিতরে প্রবেশ করে। বোরকা পরিহিত অবস্থায় বাথরুমের দরজা ভেঙে শপিং মলে প্রবেশ করে এবং শম্পা জুয়েলার্সে চুরি করে একই পথে পালিয়ে যায়। পালানোর সময় তারা ব্যবহৃত বোরকা ও সরঞ্জাম গণপূর্ত কোয়ার্টারের টয়লেটের সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে যায়।
তিনি আরও বলেন, ওই ঘটনায় ধারাবাহিক অভিযানে প্রথমে চট্টগ্রাম থেকে শাহিন মাতাব্বর ওরফে সাহিদ ওরফে শাহিনকে (৪৬) গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। পরে শাহিনের দেওয়া তথ্যে তার বাড়ির গোয়ালঘর থেকে প্রায় ১২১ দশমিক ৭ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।
একই দিন বরিশালের উজিরপুর থানার পূর্ব হারতা গ্রামে অভিযান চালিয়ে শৈশব রায় সুমনের স্ত্রী অনিতা রায়ের হেফাজত থেকে ৫২ দশমিক ৮১ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয় এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিবি প্রধান বলেন, অপর এক অভিযানে গতকাল দিবাগত রাত ১ টার পর নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে মো. নূরুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে প্রায় দুই ভরি স্বর্ণ, একটি মোটরসাইকেল এবং ১ লাখ ৭৭ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। একই দিন অর্থ সরবরাহকারী ও রেকিতে অংশগ্রহণকারী উত্তম চন্দ্র সুরকে ভোরে শাখারী বাজারের নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে ১৩ দশমিক ৬৭ ভরি স্বর্ণ এবং ৯৩ দশমিক ৫ গ্রাম রৌপ্য উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় মোট চারজনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি প্রায় ১৯০ ভরি স্বর্ণ, ৯৩ দশমিক ৫ গ্রাম রৌপ্য, ১লাখ ৭৭ হাজার ২০০ টাকা নগদ এবং একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান শফিকুল ইসলাম বলেন, চক্রটি এর আগেও এভাবে চুরি করেছিল। তারা মূলত সংঘবদ্ধ চুরি পেশার সাথে জড়িত। তবে এর আগে তারা গ্রামে কৃষি কাজ করত।