শিরোনাম
ঢাকা, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের মধ্য দিয়েই জাতিকে অন্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান এ মন্তব্য করেছেন।
আজ (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. মঈন আরও বলেন, বিগত ১৫ বছরে শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের নীতি নেওয়া হয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল স্পষ্ট-যদি শিক্ষা ধ্বংস করা যায়, তবে জাতিকেও ধ্বংস করা যাবে। কারণ তখন মানুষ যুক্তি দিয়ে কথা বলতে পারবে না, ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য বুঝবে না, প্রতিবাদও করতে পারবে না।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
‘শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড, শিক্ষক তার আত্মা’ বলে উল্লেখ করেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা। তিনি বলেন, শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর। যে দেশ শিক্ষায় উন্নত হতে পারেনি এবং ভালো শিক্ষক ও ছাত্র তৈরি করতে পারেনি, সে দেশ কখনোই এগিয়ে যেতে পারেনি।
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকার সবসময় চায় মানুষ যেন অন্ধ, নির্বাক ও অসচেতন থাকে। তাই তারা শিক্ষাকে ধ্বংস করেছে। এই অবস্থা থেকে বের হতে গণতান্ত্রিক, ন্যায় ও মানুষের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আব্দুল মঈন খান বলেন, জার্মানির ইতিহাস আমাদের শেখায়, জ্ঞান, শিক্ষা ও শিক্ষক এই ত্রয়ীই জাতির মূল শক্তি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসের পরও তারা শিক্ষার শক্তিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ডিগ্রি শেষ করার জন্য সময়সীমা ছিল না। সবচেয়ে অনুপ্রেরণাদায়ক বিষয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শেষে ছাত্ররা শিক্ষক হতে চাইত। এটাই ছিল তাদের জাতীয় দর্শন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বর্তমানে বিশ্বের প্রথম ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৬০৭০টি। অনেকে বলেন, আমেরিকা শক্তিশালী তাদের সামরিক শক্তির কারণে। আমি বলব, তাদের প্রকৃত শক্তি শিক্ষায়। শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়, শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ও মেধাবী ছাত্ররা তাদের আসল সম্পদ।
‘শিক্ষককে অপমান করে উন্নয়ন সম্ভব নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষকদের ওপর লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাস ছোড়া কলঙ্কজনক ঘটনা। একজন শিক্ষক হিসেবে এটা আমার কাছে শুধু ব্যক্তিগত আঘাত নয়, শিক্ষার প্রতি অবমাননাও।
শিক্ষা সংস্কারের উদ্দেশ্যে অসংখ্য কমিটি ও সভা-সেমিনার হওয়া সত্ত্বেও মাঠপর্যায়ে বাস্তব প্রতিফলন দেখা যায়নি বলেও অভিযোগ করেন ড. মঈন।
তিনি বলেন, জাতিকে টিকিয়ে রাখতে হলে শিক্ষাকে আবার রাষ্ট্রের প্রথম অগ্রাধিকার করতে হবে। শিক্ষককে দিতে হবে সম্মান, ছাত্রকে মানসম্মত শিক্ষা আর বিশ্ববিদ্যালয়কে ফিরিয়ে দিতে হবে হারানো মর্যাদা।