শিরোনাম
ময়মনসিংহ, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে এনসিপি নির্ণায়কের ভূমিকা পালন করবে এবং একটি স্থিতিশীল, ভারসাম্যপূর্ণ সংসদ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। তিনি বলেন, এনসিপি উচ্চ কক্ষের পক্ষে, নিম্নকক্ষে পিআর এর বিপক্ষে।
আজ মঙ্গলবার নগরীর টাউন হলের তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে জেলা সাংগঠনিক সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
সারজিস আলম আরও বলেন, সংস্কার ও বিচারের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে এনসিপি তার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ পরিশ্রম চালিয়ে যাবে।
তরুণদের ক্ষমতায়নকে তিনি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের সবচেয়ে জরুরি দাবি হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও দুর্নীতিবিরোধী গণআন্দোলনের মাধ্যমে তরুণ নেতৃত্বের ওপরই আগামী দেশের রূপ তৈরি হবে।
সাংগঠনিক বিস্তৃতি নিয়ে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, খুব শিগগিরই এনসিপি দেশের প্রতিটি ওয়ার্ডে সাংগঠনিকভাবে ছড়িয়ে পড়বে এবং জুলাই সনদের বাস্তবায়ন ও দৃশ্যমান বিচারের পর অনুষ্ঠিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার নির্বাচনে এনসিপি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান দল হিসেবে আবির্ভূত হবে।
নির্বাচন কমিশন ও শাপলা প্রতীকের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সারজিস আলম স্পষ্টভাবে প্রশ্ন তুলে বলেন, নির্বাচন কমিশন কি জনগণের প্রতি মুখাপেক্ষী নাকি কোনো রাজনৈতিক দলের বা অস্ত্রভীতির মুখাপেক্ষী? নির্বাচন কমিশনকে এই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। আইনগত কোনো বাধা না থাকার পরও শাপলা প্রতীক না দেয়া হলে তা অন্যায় ও জবাবদিহিতার বাইরে চলে যাওয়া হিসেবে গণ্য হবে এবং সেই পরিস্থিতিতে এনসিপি রাজপথে লড়াই করতেও প্রস্তুত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, শাপলা না পাওয়ার কোনো আইনি কারণ নেই, যদি কাউকে অন্যায়ভাবে প্রতীক থেকে বঞ্চিত করা হয়, আমরা তা মেনে নেবো না। যে নির্বাচন কমিশন এমন অন্যায় করে, সেখানে ওই কমিশন কখনো স্বাধীন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে পারবে না। তিনি পুনরায় জোর দিয়ে বলেন, এনসিপি শাপলা প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করবে এবং সাংগঠনিকভাবে প্রতিটি আসনে প্রার্থী দেয়ার সক্ষমতা রাখে।
নির্বাচনী কৌশল সম্পর্কে সারজিস আলম জানান, কয়েকটা সীটের জন্য কারো সাথে নেগোসিয়েশন করবে এনসিপি এই নীতিতে বিশ্বাস করে না। তবে যদি কোনো রাজনৈতিক দল জনগণের আকাঙ্খা অনুযায়ী পরিবর্তনের নির্দিষ্ট কমিটমেন্ট নিয়ে আসে এবং জাতীয় স্বার্থে ঐক্যমত্যের চিত্র দেখা যায়, তখন ইলেক্টোরাল অ্যালায়েন্সের সম্ভাবনা বিবেচনা করা যেতে পারে।
আওয়ামী লীগের শক্তি ভাঙতে অর্থনৈতিক জট খুলে দেয়া প্রয়োজন বলে মত দেন সারজিস আলম। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট কাঠামো টিকে থাকার কারণগুলোর একটি হলো- তাদের অর্থনৈতিক সাপ্লাই চেইন, যে প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি তাদের আর্থিক সাপোর্ট দেয়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া না হলে বাস্তব পরিবর্তন সম্ভব নয়।
এনসিপি ময়মনসিংহ জেলার প্রধান সমন্বয়কারী এডভোকেট জাবেদ রাসিনের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকিন আলম, কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) প্রীতম সোহাগ, কেন্দ্রীয় সদস্য ফাহিম রহমান খান পাঠান সহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।