বাসস
  ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮:৪৭

আবাসিক হলে হবে না চাকসুর ভোটকেন্দ্র, আচরণবিধি প্রকাশ

ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : আবাসিক হলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের (চাকসু) কোন ভোটকেন্দ্র থাকবে না। ভোটকেন্দ্র হবে শুধু অনুষদ ভবনে। নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যক্তিগত চরিত্রহনন-আক্রোশ, উসকানিমূলক বক্তব্য নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা প্রকাশ উপলক্ষে ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানিয়েছেন চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন।

সভায় প্রার্থী, ভোটার ও সাংবাদিকদের জন্য আচরণবিধি পড়ে শোনান নির্বাচন কমিশনার লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক আমির মুহাম্মদ নসরুল্লাহ। এতে তিনি ১৭টি নির্দেশনার কথা উল্লেখ করেন।

আচরণ বিধিমালার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার দিন থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দিনের ২৪ ঘণ্টা পূর্বে পর্যন্ত প্রচারণা করতে পারবেন প্রার্থীরা। অর্থাৎ ভোটের আগেরদিন কোনো নির্বাচনী প্রচারণা চলবে না। প্রতিদিন প্রচারের সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা। সন্ধ্যার পরে ক্যাম্পাসে প্রচারণায় কোনো ধরনের মাইক ব্যবহার করা যাবে না।

তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণার ক্ষেত্রে প্রার্থী কিংবা প্রার্থীর পক্ষে সবাইকে দেশের প্রচলিত আইন মেনে চলতে হবে। প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত চরিত্রহনন, মানহানি, অশালীন আচরণ, উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া যাবে না, যাতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানসম্মান বজায় থাকে। কেউ যেন ব্যক্তিগত আক্রোশ না দেখায়, সেই অনুরোধ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, এমন কোনো বক্তব্য ব্যবহার করা যাবে না।’

এতে আরও বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো স্থাপনা কিংবা বৈদ্যুতিক খুঁটিতে কোনো পোস্টার লাগানো যাবে না। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার বা লিফলেটের ক্ষতিসাধন করা যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কালচারাল ক্লাব, ধর্মীয় সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠন, রাজনৈতিক দল কিংবা রিজিওনাল অর্গানাইজেশন, কেউ কোনো প্রার্থীর পক্ষে কোনো প্রচারণা চালাতে পারবে না। কোনো প্রার্থী কোনো ব্যক্তি, সংগঠন, প্রতিষ্ঠান কিংবা শিক্ষার্থীর কাছ থেকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো আর্থিক লেনদেন বা চাঁদা-অনুদান গ্রহণ করতে পারবেন না।

ছেলেদের প্রচারণার জন্য মেয়েদের হলে প্রবেশের সময় রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি নিয়ে যেতে হবে। নির্বাচন চলাকালে ও প্রচারণার সময় বিস্ফোরক, দেশীয় অস্ত্রসহ সকল ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র বহন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।

এদিকে অনুষদ ভবনে ভোটকেন্দ্র করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে সভায় নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, ‘গত নির্বাচন (১৯৯০ সালে) হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরি স্কুলে। কারণ, ওই স্কুলের পাশেই তখন প্রশাসনিক ভবন ছিল। এবার অনুষদ ভবনে হবে। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক শিক্ষার্থীদের চেয়ে অনাবাসিক শিক্ষার্থী বেশি। তারা হলের চেয়ে অনুষদ ভবন বেশি চেনেন।’

নির্বাচন নিয়ে কোনো সংঘাতের আশঙ্কা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসন থেকে চাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন। যখন যে অবস্থায় সাহায্যের দরকার হয়, আইন মেনে তারা সাহায্য করবেন। এখন পর্যন্ত কোনো সংঘাত বা সংঘর্ষের আশঙ্কা নেই। 

পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮টি বিভাগ ও ৬টি ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম পরিচালিত হয় আটটি অনুষদ ভবনে।

আগামী ১২ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চাকসুর ভোটগ্রহণ হবে। খসড়া তালিকা অনুযায়ী বর্তমানে চাকসুর ভোটার ২৫ হাজার ৮৬৬ জন। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করার কথা রয়েছে।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব ও শহীদ আবদুর রব হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী, নির্বাচন কমিশনার আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মু. জাফর উল্লাহ তালুকদার, নির্বাচন কমিশনার লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, নির্বাচন কমিশনার ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেসের অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান চৌধুরী, শামসুন্নাহার হলের প্রাধ্যক্ষ বেগম ইসমত আরা হক।