শিরোনাম
চাঁদপুর, ১৯ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): জেলার চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর পাড় ঘেঁষে অবৈধভাবে আবারো ড্রেজার দিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে একটি চক্র। এতে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে ঘেনা-ধনাগোদা বন্যা নিয়ন্ত্রণ সেচ প্রকল্পের ৬৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। গত কয়েকমাস প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন হলেও দেখা যায়নি প্রশাসনিক কোন ব্যবস্থা।
গত কয়েকদিন ধরে উপজেলার মেঘনা নদী উপকূলীয় দশানি, ষাটনল, নাছিরা কান্দি, বোরচর এলাকায় প্রকাশ্যে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলতে দেখা যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বালু সন্ত্রাসী কিবরিয়া মিয়াজি ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরেই এভাবে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। তার এই ধরনের কাজে জড়িতদের মধ্যে বিরোধে বিগত সময়ে একাধিক ব্যক্তিও গোলাগুলিতে নিহত হয়েছে। এসব ঘটনায় এখনো মামলা চলমান রয়েছে।
স্থানীয় দশানি গ্রামের মাজেদুর রহমান বলেন, দিন-রাত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তোলে। নদীর পাড় ধসে আমাদের ফসলি জমি ও বসত-ভিটা নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বেড়িবাঁধ যদি ভেঙে যায়, তাহলে পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে যাবে। অথচ কেউ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রশাসনকে বারবার জানালেও কোনো ফল পাইনি। মনে হয় বালু সিন্ডিকেটের কাছে প্রশাসন জিম্মি।
‘মাটি ও মানুষ’ নামে মতলবের পরিবেশবাদী সংগঠনের পরিচালক শামীম খান বলেন, বালু উত্তোলন বন্ধে সরকারি নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও দিনের পর দিন অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন চলছে।
এটি কেবল নদী ভাঙন বাড়াচ্ছে না। বরং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্যও মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপজেলার মোহনপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী বলেন, মূলত বালু উত্তোলনের জন্য মুন্সিগঞ্জ এলাকায় প্রশাসন অনুমোদন দিয়েছে। সেখানে তারা বালু উত্তোলন করে। নৌ পুলিশ অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে তৎপর রয়েছে।
মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, মতলব উত্তরের সীমানায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে নদীতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। ঘটনাস্থলে নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা অচিরেই যৌথবাহিনীর একটি অভিযান পরিচালনা করব। জেলা প্রশাসক আরো বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কেউ পার পাবে না। এতে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হলে লাখো মানুষ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।