বাসস
  ১৭ জুলাই ২০২৫, ১৯:২৬

মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়ন ও যৌথ গবেষণার উদ্যোগ গ্রহণ

ছবি : বাসস

ঢাকা, ১৭ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষা ও যৌথ গবেষণার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং নেটওয়ার্কিং বিষয়ে এক যৌথ নেটওয়ার্কিং সভায় এ উদ্যোগ নেয়ার বিষয়টি অবহিত করা হয় ।

আজ বৃহস্পতিবার ইউজিসিতে অনুষ্ঠিত নেটওয়ার্কিং সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এসএমএ ফায়েজ।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সুহাদা ওসমান, ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, প্রফেসর ড. মো. সাইদুর রহমান ও প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বৃত্তির সুযোগ-সুবিধা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিনিময়, যৌথ মাস্টার্স, পিএইচডি ও পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রোগ্রাম চালু, বায়োটেকনোলজি ও হেলথ সায়েন্সেস গবেষণায় সহযোগিতা, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া লিংকেজ বৃদ্ধি, ভাষা ও সংস্কৃতির বিনিময়, যৌথ গবেষণা আবেদন আহ্বান, উচ্চশিক্ষায় সুশাসন নিয়ে পলিসি ডায়ালগ আয়োজন ও জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ফায়েজ প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, মালয়েশিয়ায় অনেক বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তারা পশ্চিমা বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একই মানের শিক্ষা প্রদান করছে। তাদের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় সক্ষমতা রয়েছে। আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী যাতে উভয় দেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পায় সেজন্য ক্রেডিট ট্রান্সফার ও ভিসা জটিলতা নিরসনসহ বিদ্যমান অন্যান্য সমস্যাগুলো সমাধান করা জরুরি।

সাম্প্রতিক সময়ে মালয়েশিয়ায় শিক্ষা বিষয়ক সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে প্রফেসর ফায়েজ বলেন, বাংলাদেশ এবং মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ক্রমশ উন্নতি করছে এবং বিশ্বমানের শিক্ষা প্রদান করছে। উন্নতমানের গবেষণা পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সমৃদ্ধ ল্যাব এবং যোগ্য শিক্ষক রয়েছে। দেশ দু’টির সংস্কৃতি ও মূল্যবোধেও মিল রয়েছে। উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দেশ দু’টির চমৎকার সুযোগ রয়েছে। ইউজিসি এক্ষেত্রে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করবে বলে তিনি জানান।

মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূত সুহাদা ওসমান বলেন, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একসাথে কাজ করার বহু সুযোগ রয়েছে। মালয়েশিয়া সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষা প্রদান করছে। দেশটিতে বিশ্ব র‌্যাংকিং-এ সেরা ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে স্থান পাওয়া ৫টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। জাতির চাহিদা পূরণ ও ভবিষ্যত শিক্ষা ব্যবস্থার উপযোগী মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকৌশল, প্রযুক্তি, ব্যবসাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পাঠদান করা হচ্ছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা মালয়েশিয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা ব্যবস্থায় পূর্ণ আস্থা রাখতে পারেন বলে তিনি জানান।

এসময় তিনি বাংলাদেশি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণা ও বৃত্তির সংখ্যা বৃদ্ধি ও যৌথ ডিগ্রি, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া লিংকেজ বৃদ্ধির বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। এছাড়া, মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ভাষা শিক্ষা প্রোগ্রামে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা আবেদন করতে পারেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

ইউজিসি সদস্যরা তাদের বক্তব্যে দুই দেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে যৌথ সহযোগিতামূলক কার্যক্রম এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে একমত পোষণ করেন।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূঁইয়া, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক, ইউজিসি সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম, ইন্টারন্যাশনাল কোলাবরেশন বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) জেসমিন পারভীন, এডুকেশন মালয়েশিয়া গ্লোবাল সার্ভিসেস (ইএমজিএস)-এর হেড অব কর্পোরেট স্ট্র্যাটেজি আজহার বিন মোহাম্মদ বক্তব্য প্রদান করেন।

ইউজিসি’র ইন্টারন্যাশনাল কোলাবরেশন বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক খন্দকার সাবাহাত রিজভী-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে দেশের ৫২টি পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, ইউজিসি’র পরিচালকবৃন্দ, রেজিস্ট্রার, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ডেস্কের পরিচালকবৃন্দ, এডুকেশন মালয়েশিয়া গ্লোবাল সার্ভিসেস এবং মালয়েশিয়ার ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাগণ অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা যৌথ উদোগ বাস্তবায়নে তাদের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং গবেষকদের অধ্যয়ন, গবেষণা, পড়াশোনা এবং পাঠদানের অধিকতর সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে মালয়েশিয়ার ৫টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউজিসি পৃথক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।