বাসস
  ০৫ জুন ২০২৫, ১৫:৩১

শেষ সময়ে সরগরম ধোলাইখাল ও কমলাপুর পশুর হাট

ধোলাইখাল ও কমলাপুর পশুর হাট জমে উঠেছে। ছবি: বাসস

ঢাকা, ৫ জুন, ২০২৫ (বাসস): পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে রাজধানীর পুরান ঢাকার ধোলাইখাল ও কমলাপুরের কোরবানির পশুর হাট জমে উঠেছে। ঈদের আর মাত্র দুই দিন আগে থেকেই হাটগুলোতে বাড়ছে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়। বগুড়া ,চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া, নাটোর, পাবনা, মেহেরপুর ও কিশোরগঞ্জ থেকে প্রচুর সংখ্যক গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়া এসব হাটে উঠেছে।

সরেজমিনে ধোলাইখাল ও কমলাপুর হাট ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হাটে ক্রেতা ও বিক্রেতার ভিড় লেগেই আছে। একদিকে বিক্রেতারা গরু নিয়ে ব্যস্ত অন্যদিকে ক্রেতারাও তাদের পছন্দের পশু খোজ করছেন। হাট এখন পশুর দরদাম ও বেচাকেনার তুঙ্গে রয়েছে। তবে এখনো অনেক বিক্রেতার আশা, শেষ মুহূর্তে ভালো আরো দাম পাবে, তাই তারা সব গরু এখনই ছাড়তে চাচ্ছেন না।

এই বছর মাঝারি দেশি গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। হাটে ছোট গরুর দাম ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার ও মাঝারি গরু ১ লাখ ৩০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকার মধ্যে চাওয়া হচ্ছে ।

এছাড়া ছোট খাসির দাম ১৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার ও মাঝারি খাসির দাম ২৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।

হাট ঘুরে দেখা গেছে, অনেকেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে এসেছেন গরু কিনতে। কেউ কেউ গরু পছন্দ করে দরদাম করে রাখছেন, আবার কেউ ভিডিয়ো কলে পরিবারের সদস্যদের দেখিয়ে পছন্দ করছেন। শিশুদের মাঝে গরু দেখার উচ্ছ্বাসও লক্ষণীয়। বিক্রেতাদের হাঁকডাক, দরদামের কৌশল আর ভিড়ের মাঝে এক ধরনের উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে পুরো হাটজুড়ে। হাটে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের জন্য নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশি টহল, জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন, বিনামূল্যে পশুর চিকিৎসা ও ঔষধের ব্যবস্থাও রয়েছে। গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রাথমিক চিকিৎসায় নিয়োজিত রয়েছে ভেটেরিনারি টিম।

কমলাপুর পশুর হাটে বগুড়া থেকে গরু নিয়ে এসেছেন বিক্রেতা রবিউল ইসলাম। তিনি বার্তা সংস্থা বাসস’কে বলেন, ‘এবার ১৭টি গরু এনেছি। ইতোমধ্যে ৮টি বিক্রি হয়েছে। ক্রেতারা দরদাম করছেন, সুবিধামতো দাম পাওয়া গেলে তখনই গরু ছাড়ছি। দাম কিছুটা বেশি, কারণ আমরা গ্রাম থেকে গরু ট্রাকে করে ঢাকায় নিয়ে এসেছি। ট্রাক ভাড়া, পশু খাদ্য, নিজেদের খাওয়া-দাওয়া ও থাকাসহ সব মিলিয়ে আমাদের ব্যয় অনেক। তাই দাম একটু বাড়তি হলে সেটা অস্বাভাবিক নয়।’

পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী আবদুল মালেক ধোলাইখাল হাটে গরু কিনতে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘বাজারে এসে কয়েকটা গরুর দামদর করেছি। গত বছরের তুলনায় দাম কিছুটা বেশি মনে হচ্ছে। পরিবারের জন্য মাঝারি সাইজের একটা দেশি গরু নিতে চাই। যতগুলো গরু দেখেছি, সবই দেখতে ভালো। তবে কিছু বিক্রেতা বেশি দাম চাচ্ছেন। তারপরও হাটে এসে নিজের হাতে গরু দেখে কিনে নেওয়ার আলাদা আনন্দ আছে।’

অপরদিকে, হাটের চারপাশে অস্থায়ী খাবার দোকান, পানির বোতল, পশুর খাবার, দড়ি বিক্রির দোকানও জমে উঠেছে।