শিরোনাম

রাজশাহী, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : রাজশাহীতে এক ওরিয়েন্টেশন মিটিংয়ে বক্তারা জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় বরেন্দ্র অঞ্চলে জলবায়ু নীতি প্রণয়নে নারী ও তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেছেন।
তারা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন নারীদের এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবিকা ও জীবনযাত্রার ওপর গুরুতর হুমকির সৃষ্টি করেছে। ফলে, জলবায়ু ন্যায়বিচার ও নীতি পরিকল্পনায় তাদের নেতৃত্ব ও কণ্ঠস্বর অপরিহার্য।
আজ শনিবার ‘লিডারশিপ ডেভেলপমেন্ট, জেন্ডার ইনক্লুশন অ্যান্ড ক্লাইমেট জাস্টিস’ শীর্ষক দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডাসকো ফাউন্ডেশন। তাদের ‘জেন্ডার ইক্যুয়ালিটি ট্রান্সফর্মস ক্লাইমেট অ্যাকশন (গেটকা)’ প্রকল্পের আওতায় অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সহায়তা করছে বাংলাদেশস্থ সুইস দূতাবাস এবং গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা।
ক্লাইমেট অ্যাকশন ফোরামের (সিএএফ) সদস্যসহ সভায় অংশগ্রহণকারীরা স্থানীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব গড়ে তোলা, কমিউনিটি সহনশীলতা বৃদ্ধি এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক জলবায়ু নীতি নিশ্চিত করার কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সিএএফ সভাপতি আফজাল হোসেন। এসময় বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সহ-সভাপতি ফয়জুল্লাহ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দা শামসুন্নাহার মুক্তি এবং নির্বাহী সদস্য আকবারুল হাসান মিল্লাত, আশরাফুল হক ও হাসিনুর রহমান।
কনসেপ্ট পেপার উপস্থাপনকালে গেটকা প্রকল্পের জেলা সমন্বয়কারী মদন দাস বলেন, ৩০ মাস মেয়াদি প্রকল্পটি তানোর, গোদাগাড়ী ও চারঘাট উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নে বাস্তবায়ন হচ্ছে।
উদ্যোগটির লক্ষ্য হলো— নাগরিক সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা, কমিউনিটি নেতাদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা এবং নাগরিক ও সরকারি প্রতিনিধিদের মধ্যে সংলাপ জোরদার করা; যাতে আরো অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি প্রণয়ন সম্ভব হয়।
বক্তারা উল্লেখ করেন, বরেন্দ্র অঞ্চলে ঘন ঘন খরা নারীদের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিচ্ছে। কারণ, তারা ক্রম-হ্রাসমান উৎস থেকে পানি সংগ্রহে দীর্ঘ সময় ব্যয় করছেন।
তারা বলেন, এ পরিস্থিতি স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি আরো নাজুক অবস্থায় ফেলেছে। এতে বিশেষ করে নারী ও শিশুদের মধ্যে পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি বাড়ছে।
আলোচকরা জোর দিয়ে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সহনশীলতা বাড়াতে নারীদের সম্পদ, তথ্য এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা দিয়ে সমৃদ্ধ করা জরুরি।
তারা আরো উল্লেখ করেন, কৃষির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা নারীরা খরা, পানি সংকট এবং খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মতো জলবায়ু উদ্ভূত চ্যালেঞ্জে অসামঞ্জস্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অংশগ্রহণকারীরা টেকসই কৃষি, পানি ব্যবস্থাপনা এবং স্বাস্থ্যসেবায় নারীদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান, যাতে তাদের জীবিকা রক্ষা করা যায় এবং ঝুঁকি কমানো সম্ভব হয়।