শিরোনাম
বিপুল ইসলাম
লালমনিরহাট, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : লালমনিরহাট সদরের হারাটি ইউনিয়নের টাপুর গ্রামে সতী নদীর ওপর প্রায় ১৫০ মিটার দীর্ঘ বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছেন যুবদলের নেতাকর্মীরা। নিজেদের উদ্যোগ ও অর্থায়নে টানা পাঁচ দিন স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত এই সাঁকোই এখন দুই তীরের মানুষের মধ্যে স্বস্তি এনেছে।
জেলা যুবদলের নেতা-কর্মীদের উদ্যোগে সাঁকোটি চালু হওয়ায় টাপুর ও আশপাশের এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ কিছুটা কমেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পাড় হওয়া মানুষগুলো এখন রিকশা ও সাইকেলসহ সহজে সাঁকো পার হতে পারছেন। তাই স্থায়ী সেতু নির্মাণের আগে বাঁশে তৈরি সেতুতেই আশা দেখছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় কৃষক নুরুজ্জামান মিয়া (৫০) বলেন, সতী নদীর ওপর স্থায়ী সেতু না থাকায় বহু বছর ধরে কষ্ট পোহাতে হয়েছে। আগে গ্রামের মানুষ চাঁদা তুলে অস্থায়ী সাঁকো বানাত, যা বর্ষায় ভেসে যেত। এবার যুবদল নেতারা মজবুত সাঁকো নির্মাণ করায় আমাদের চলাচল অনেক সহজ হয়েছে।
টাপুর পার গ্রামের নুরুজ্জামাল হোসেন (৪৫) বলেন, আগে সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠালে সারাক্ষণ দুশ্চিন্তা হতো—নদী পার হতে গিয়ে কোনো দুর্ঘটনা ঘটে কি না। এখন সেই ভয় আর নেই। যুবদলের এমন মানবিক উদ্যোগের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।
একই এলাকার হায়দার মিয়া (৪২) জানান, একটি স্থায়ী সেতুর জন্য আমরা বহু বছর ধরে অপেক্ষায় আছি। এখন অন্তত একটি মজবুত বাঁশের সাঁকো হওয়ায় পারাপারে স্বস্তি এসেছে।
জেলা যুবদলের সদস্যসচিব হাসান আলী বলেন, মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য আমরা নিজেরা টাকা তুলে ও স্বেচ্ছাশ্রমে এসব কাজ করছি। গত দেড় মাসে জেলা যুবদলের নেতাকর্মীরা প্রায় ৭০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা সংস্কার করেছে। আগামীতে আরও কয়েকটি রাস্তা ও সাঁকো সংস্কারের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে, যাতে গ্রামের মানুষ সহজে চলাচল করতে পারে।
জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনিছুর রহমান আনিছ বলেন, এলাকার মানুষের দুর্ভোগের কথা শুনে আমরা নিজেরাই টাকা সংগ্রহ করে এই সাঁকো নির্মাণ করেছি। আমাদের নেতাকর্মীরাই টানা পাঁচ দিন শ্রম দিয়েছেন, কোনো শ্রমিক নিযুক্ত করা হয়নি। বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু সাঁকোটি উদ্বোধন করেছেন। তিনি রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে থেকে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী কাওছার আলম বলেন, সতী নদীর ওপর স্থায়ী সেতু নির্মাণের বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। শিগগিরই এলাকা পরিদর্শন করে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করা হবে।