শিরোনাম
/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/
খুলনা, ৪ অক্টোবর ২০২৫ (বাসস): সাগরে ইলিশ ধরা, পরিবহণ, বিপণন ও মজুদে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। যা আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এ নিষেধাজ্ঞায় ২২ দিনের জন্য কর্মহীন হয়ে পড়া খুলনার প্রায় ৩ হাজার জেলের জন্য সরকারিভাবে ৭৩.৪০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। জনপ্রতি ২৫ কেজি করে এ চাল জেলেদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আজ শনিবার (৪ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়েছে ইলিশ মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা।
প্রতি বছর আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমার আগে ও পরে ইলিশের ডিম ছাড়ার আসল সময়। এ সময় সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ দেশের নদ-নদীতে ছুটে আসে। এই সময়কে বিবেচনায় নিয়ে প্রতি বছরের মতো এ বছরও ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। খুলনায় ইলিশ আহরণকারী ২ হাজার ৯৩৬ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে।
মৎস্য বিভাগ জানায়, মা ইলিশ রক্ষায় এবার কঠোর অভিযান পরিচালিত হবে এবং কার্ডধারী জেলেদের মাথাপিছু ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে।
জেলা মৎস্য অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, খুলনার ২০টি নদ-নদীতে ইলিশ আহরণ হয়। এর মধ্যে পশুর, শিবসা, ভদ্রা, ঢাকী, চুনকুড়ি, ঝপঝপিয়া, কাজীবাছা, শৈলমারী, গেংরাইল, হরি নদী, ভদ্রা নদী, দেলুটি, হাবরখানা, ভৈরব, রূপসা, আতাই, মজুদখালী, কপোতাক্ষ, কয়রা ও শেখের বাড়িয়া নদীতে জেলেরা ইলিশ আহরণ করেন। এসব নদীতে ৩ হাজার ৬০১ জন জেলে শুধু ইলিশ আহরণ করে থাকেন।
খুলনা জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান এক দাপ্তরিক নির্দেশনায় উল্লেখ করেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মঞ্জুরি করা ভিজিএফ (চাল) ইলিশের প্রধান মৌসুমে প্রজননক্ষম ইলিশ আহরণে বিরত থাকা জেলে পরিবারের মধ্যে মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন নির্দেশিকা ২০১২-২০১৩ অনুযায়ী আগামী ১২ অক্টোবরের মধ্যে উত্তোলন, বিতরণ ও বণ্টন সম্পন্ন করবেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাদ্দ প্রাপ্তির দুই কর্মদিবসের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের অনুকূলে ডিও (ছাড়পত্র) প্রদান ও বিতরণ সূচি প্রদান করবেন। ভিজিএফ চাল বিতরণকালে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বা তার প্রতিনিধি এবং ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। কার্ডধারী জেলে ছাড়া অন্য কাউকে এ ভিজিএফ (চাল) বিতরণ করা যাবে না।
এ বিষয়ে খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান বাসসকে বলেন, জেলার দিঘলিয়া, তেরখাদা, বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া, দাকোপ ও পাইকগাছা উপজেলায় ৩ হাজার ৬০১ জন ইলিশ আহরণকারী জেলে রয়েছে।
তবে এবার ডুমুরিয়া বাদে বাকী ৬ উপজেলার ২ হাজার ৯৩৬ জন ইলিশ আহরণকারী জেলের জন্য বরাদ্দ এসেছে ৭৩.৪০ মেট্রিকটন ভিজিএফ (চাল)। বিগত বছরে ডুমুরিয়া উপজেলার জেলেদের তালিকা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণে বিলম্ব হওয়ার কারণে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে পরবর্তীতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে।
বদরুজ্জামান বলেন, ‘ইলিশ আহরণকারী প্রতিটি জেলের জন্য ২৫ কেজি চাল বরাদ্দ রয়েছে। আগামী ১২ অক্টোবরের মধ্যে জেলেদের মধ্যে চাল বিতরণ করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন জেলেরা ইলিশ মাছ ধরতে পারবে না। এই সময়ে আহরণ, পরিবহণ, বিপণন ও মজুদে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ হবে।