বাসস
  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:১৫

শিশুদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিষিদ্ধের পদক্ষেপে ইইউ প্রধানের সমর্থন

ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : শিশুদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিষিদ্ধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লায়েন। 

বুধবার তিনি আগামী মাসগুলোতে ইউরোপীয় পর্যায়ে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

জাতিসংঘ থেকে এএফপি জানায়, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে এক অনুষ্ঠানে ফন ডার লায়েন বলেন, অনেক সদস্য রাষ্ট্র বিশ্বাস করে, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের জন্য ‘ডিজিটাল প্রাপ্তবয়স্ক’ বয়স নির্ধারণের এখন সময় এসেছে।

তিনি বলেন, আমি সাত সন্তানের মা এবং পাঁচজন নাতি-নাতনি রয়েছে। আমি তাদের মতের সঙ্গে একমত।

অনুষ্ঠানে কথা বলার সময় ফন ডার লায়েনের পাশে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ। 

অস্ট্রেলিয়া ইন্টারনেটের ক্ষতিকর প্রভাব রোধে বৈশ্বিক প্রচেষ্টার অগ্রভাগে রয়েছে। দেশটিতে প্রথমবারের মতো ১৬ বছরের নিচে শিশুদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।

ভন ডার লিয়েন বলেন, আমরা সবাই একমত, তরুণদের একটি নির্দিষ্ট বয়সে পৌঁছানোর আগে তাদের ধূমপান, মদ্যপান বা প্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্টে প্রবেশাধিকার দেওয়া উচিত নয়। একই কথা সোশ্যাল মিডিয়ার জন্যও বলা যেতে পারে।

ফন ডার লায়েন জানান, তিনি একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করবেন এবং অভিভাবক, শিক্ষক এবং তরুণদের সঙ্গে আলোচনা করবেন যাতে ইউরোপীয় পর্যায়ে কোন পদক্ষেপগুলো অর্থপূর্ণ হবে, তা মূল্যায়ন করা যায়।

২৭ জাতির এই ব্লকে অনলাইনে ক্ষতিকারক কন্টেন্টের বিরুদ্ধে লড়তে বিশ্বের কিছু কঠোর নিয়ম রয়েছে। 

সেখানে বড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো শিশুদের সুরক্ষা দেয় কি না, তা নিয়ে বেশ কয়েকটি তদন্ত চলছে।

ফ্রান্স, গ্রিস এবং স্পেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে রয়েছে। তারা  অনলাইন প্ল্যাটফর্মে শিশুদের প্রবেশাধিকার সীমিত করার পক্ষে জোরালো দাবি জানাচ্ছে।

তারা এই বছর শুরুর দিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নজুড়ে ‘ডিজিটাল প্রাপ্তবয়স্ক’ বয়স নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে। 

তবে প্রথমে ব্রাসেলস এ বিষয়ে অনাগ্রহ দেখায়।

ভন ডার লিয়েনের কমিশন তখন জানান, এ পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করবে, এটি ইউনিয়নের নির্বাহী সংস্থার তরফ থেকে চাপিয়ে দেওয়া হবে না।

ফেসবুক ও  ইনস্টাগ্রামের মালিক মেটাসহ সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো অস্ট্রেলিয়ার আইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

ছয় মাসের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্সির দায়িত্বে থাকা ডেনমার্ক এই বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং ব্লককে আরও পদক্ষেপ নিতে চাপ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

ফ্রান্সও এ বিষয়টিকে শীর্ষ এজেন্ডায় নিয়ে এসেছে। দেশটিতে ইতোমধ্যে ২০২৩ সালে একটি আইন পাস হয়েছে। প্ল্যাটফর্মগুলোতে বয়সের সীমাবদ্ধতা ১৩ বছর হলেও ফ্রান্স ১৫ বছরের নিচে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের জন্য বাবা-মায়ের সম্মতি আবশ্যক করেছে।

ফরাসি আইনপ্রণেতারা আরও একধাপ এগিয়ে গিয়ে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের জন্য ‘ডিজিটাল কারফিউ’ চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন। যেমন- রাত ১০টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত তারা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে পারবে না।

তারা বিশেষ করে টিকটক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।  চীনভিত্তিক বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন এ প্ল্যাটফর্মে আত্মহত্যার দিকে প্ররোচিত হওয়ার  কনটেন্ট রয়েছে।

ফ্রান্স ইউরোপীয় পাঁচটি দেশের মধ্যে একটি, যারা শিশুদের অনলাইনে ক্ষতিকর কনটেন্পে প্রবেশাধিকার রোধ করতে এবং ব্যবহারকারীদের বয়স যাচাই করতে একটি অ্যাপ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে।

ডেনমার্ক, ফ্রান্স, গ্রিস, ইতালি ও স্পেন  বয়স যাচাইকরণ অ্যাপের একটি প্রোটোটাইপ কাস্টমাইজ করবে, যাতে কয়েক মাসের মধ্যে জাতীয় সংস্করণগুলো চালু করা যায়।