বাসস
  ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:০২

তরুণরা যুক্ত হলে ভবিষ্যৎ জলবায়ু-সহনশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব : পরিবেশ উপদেষ্টা

রোববার আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে এনডিসি ৩.০ ভ্যালিডেশন কর্মশালায় পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি : পিআইডি

ঢাকা, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান তরুণ সমাজের অংশগ্রহণের গুরুত্ব উল্লেখ করে বলেছেন, তরুণদের যুক্ত করা গেলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য জলবায়ু -সহনশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

তিনি নবায়নযোগ্য শক্তি প্রকল্প, সবুজ উদ্যোক্তা তৈরি, গবেষণা ও সচেতনতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশকে জলবায়ু সহনশীল করে গড়ে তোলার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন।

আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে আয়োজিত ‘থার্ড ন্যাশনালি ডিটারমিন্ড কন্ট্রিবিউশন (এনডিসি ৩.০)’ এর ভ্যালিডেশন কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা জানান, ‘সরকার, উন্নয়ন সহযোগী, বেসরকারি খাত, গবেষক ও নাগরিক সমাজ—সকলের অভিন্ন প্রচেষ্টা ছাড়া টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জলবায়ু-সহনশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব নয়।’

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতকৃত এনডিসি ৩.০ বাস্তবায়নে মোট ১১৬ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন, যার মধ্যে ২৫ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন শর্তহীন এবং ৯০ দশমিক ২৩ বিলিয়ন শর্তসাপেক্ষ বিনিয়োগ ধরা হয়েছে।

পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, এ পরিকল্পনায় ২০৩৫ সালের মধ্যে মোট ৮৪ দশমিক ৯২ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড (ঈঙ₂) নিঃসরণ হ্রাসের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ দশমিক ৭ মিলিয়ন টন (৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ) শর্তহীনভাবে এবং ৫৮ দশমিক ২ মিলিয়ন টন (১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ) শর্তসাপেক্ষে হ্রাস করা হবে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘এনডিসি ৩.০ কেবল নিঃসরণ হ্রাসের লক্ষ্য নয়, বরং এটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়সংগত ভবিষ্যৎ গড়ার অঙ্গীকার।’ এজন্য নারী, শিশু, প্রবীণ, প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও জলবায়ু-অভিবাসী জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে জলবায়ু পদক্ষেপগুলোকে মানবাধিকারভিত্তিক করার ওপর জোর দেন।

তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্য, পানি-স্যানিটেশন, শিক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি ও অবকাঠামো খাতকে জলবায়ু-সহনশীল ও পরিবেশবান্ধব করে তুলতে হবে। এজন্য শিক্ষা ব্যবস্থায় জলবায়ু শিক্ষা ও সবুজ দক্ষতা অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। একই সঙ্গে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নবায়নযোগ্য শক্তিতে রূপান্তরে “ন্যায্য রূপান্তর” নিশ্চিত করতে হবে- যেখানে শ্রমিকদের পুনঃপ্রশিক্ষণ, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহায়তা এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এবং অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ। সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান। মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) ধরিত্রী কুমার সরকার কর্মশালাটি পরিচালনা করেন।

উন্মুক্ত আলোচনায় দেশি-বিদেশি সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।