শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এবং তার স্ত্রী রুখমিলা জামানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন করতে পুলিশ সদরদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার চট্টগ্রাম মহানগর স্পেশাল জজ (ভারপ্রাপ্ত) মো. আবদুর রহমানের আদালত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। গত বৃহস্পতিবার দুদক আদালতে আবেদনটি করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোকাররম হোসাইন বলেন, সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির আবেদন করতে দুদক আদালতে পিটিশন দিয়েছিল। আদালত তা মঞ্জুর করেছেন। এখন এটি পুলিশ সদরদপ্তরে যাবে। সেখান থেকে পুলিশ ইন্টারপোল বরাবর রেড নোটিশ জারির আবেদন করবে।
প্রায় ১২৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তার স্ত্রী ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান রুখমিলা জামানসহ অর্ধশত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলার তদন্ত চলছে।
গত ১৭ এপ্রিল ২০ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। ওই মামলার প্রেক্ষিতে তাদের নামে যুক্তরাজ্যে ৩৪৩টি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২৮টি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ৯টি স্থাবর সম্পদসহ অন্যান্য দেশে থাকা সম্পত্তি জব্দের আদেশ দেন আদালত।
এ ছাড়া গত ৫ মার্চ তাদের নামে থাকা ৩৯টি ব্যাংক হিসাবে ৫ কোটি ২৬ লাখ টাকার বেশি অর্থ জব্দের নির্দেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে ১০২ কোটি টাকার শেয়ার ও ৯৫৭ বিঘা জমি জব্দের আদেশও দেন। আর ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর আদালত তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) থেকে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে সাইফুজ্জামান-রুখমিলার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করে দুদক। সর্বশেষ গত ১৬ সেপ্টেম্বর ভুয়া তথ্য দিয়ে ইউসিবি থেকে প্রায় ২১ কোটি টাকা ঋণ আত্মসাতের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
এ ছাড়া গত ৪ সেপ্টেম্বর নগরের কোতোয়ালি থানায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করে। দুদক জানিয়েছে, দেশে-বিদেশে সাইফুজ্জামানের নামে-বেনামে থাকা অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, পুলিশ সদরদপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) শাখা ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির আবেদন করে থাকে। আদালত, প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ) অথবা তদন্ত সংস্থার অনুরোধে তারা এটি করে।
গত বছরের সংসদ নির্বাচনের আগে জাবেদের বিরুদ্ধে বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়ার অভিযোগ ওঠে। এরপর তাকে পরবর্তী সরকারে মন্ত্রী হিসেবে দেখা যায়নি।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগ মুহূর্তে স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লন্ডনে পালিয়ে যান জাবেদ।