বাসস
  ০৪ আগস্ট ২০২৫, ১২:৩৮

কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু

দীর্ঘ ৬২ দিন বন্ধ থাকার পর ২ আগস্ট মধ্যরাত থেকে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে আবারো মৎস আহরণ শুরু হয়েছে। ছবি : বাসস

রাঙ্গামাটি, ৪ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : দীর্ঘ ৬২ দিন বন্ধ থাকার পর রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে আবারো মাছ আহরণ শুরু হয়েছে। ২ আগস্ট মধ্যরাত  থেকেই কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে জেলা প্রশাসন। 

তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ শুরু হওয়ায় শনিবার (২ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর গতকাল রোববার ভোর থেকেই রাঙ্গামাটির ৪ টি ল্যান্ডিং ঘাট রাঙ্গামাটি, কাপ্তাই, মহালছড়ি ও মাইনী মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কর্মচাঞ্চল্যে ফিরে আসে। 

রাঙ্গামাটি বিএফডিসি ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বাসসকে জানান, মৎস্য আহরণে প্রথম দিনেই এই চারটি অবতরণ কেন্দ্রে মোট ১০৫ মেট্রিক টন মাছ আহরণ হয়েছে। এতে সরকারি রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা। 
তিনি জানান, কাপ্তাই  হ্রদে মাছ আহরণের প্রথম রাঙ্গামাটি ঘাটে ৬৫ মেট্রক টন, কাপ্তাই ঘাটে ৩০ মেট্রিক টন, মহালছড়ি ঘাটে ৮ মেট্রিক টন এবং মারিশ্যা ঘাটে ২ মেট্রিক টন মাছ অবতরণ হয়। গত বছর প্রথম দিনে মাছ অবতরণের পরিমাণ ছিল ৭৫ মেট্রিক টন, যেখানে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ১৫ লাখ টাকা।

তিনি আরো জানান,  মাছ আহরণের প্রথম দিনে আমরা সন্তুষ্ট। গতবার কাপ্তাই হ্রদে সাড়ে ৭হাজার মেট্রিক টন মাছের পোনা ছাড়া হলেও এবার কাপ্তাই হ্রদে প্রায় ৯হাজার মেট্রিকটন মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়েছে। এবার লক্ষ্যমাত্রার  চেয়েও বেশি সরকারি রাজস্ব আদায়ের আশা করছে বিএফডিসি।

রাঙ্গামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী মো. আব্দুল শুক্কুর বাসসকে জানান, দীর্ঘ তিন মাস দুই দিন পর কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ শুরু হওয়ায় মৎস্য ব্যবসার সাথে জড়িত সকলেই অনেক ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রথম দিন ভালো মাছ আহরণ হলেও এবার ছোট মাছের পরিমাণই বেশি। সামনে আরো ভালো মাছ আহরণের আশা তার। রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদ থেকে আহরিত মাছ ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করছে ব্যবসায়ীরা। 

রাঙ্গামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. কবির আহম্মদ সওদাগর বাসসকে জানান, মাছ ধরা শুরু হওয়ায় ফিশারী ঘাটে প্রাণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলেও রাঙ্গামাটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে পল্টুন আরো বাড়ানো প্রয়োজন। পল্টুন স্বল্পতার কারণে দ্রুত সময়ে মাছ অবতরণে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। মাছ অবতরণে পল্টুনের সংখ্যা বাড়ানোসহ নতুন আধুনিক ল্যান্ডিং স্টেশন করতে তিনি সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

মৎস্য সম্পদের অপার সম্ভাবনার জলাধার কাপ্তাই লেকে ড্রেজিং করে লেকের গভীরতা বৃদ্ধিসহ সরকারি সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তা পরিচালনা করা গেলে মৎস্য সম্পদ উন্নয়নের পাশাপাশি এখানকার ২৭ হাজার জেলে পরিবার, সাধারণ ব্যবসায়ীর সমস্যা সমাধানসহ সরকারি রাজস্ব অনেকাংশেই বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ স্থানীয়দের।
উল্লেখ্য, কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও মাছের পোনা বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে প্রতিবছর ৩ মাসের কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে জেলা প্রশাসন।