বাসস
  ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:৩২

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনালের গেটসহ সুপ্রিম কোর্টের প্রতিটি প্রবেশপথে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের কঠোর অবস্থান। ছবি: বাসস

ঢাকা, ১৩ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায়ের দিন ঘোষণাকে ঘিরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনালের গেটসহ সুপ্রিম কোর্টের প্রতিটি প্রবেশপথে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের কড়া অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে।

চব্বিশের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের রায়ের দিন নির্ধারণ করা হয় বৃহস্পতিবার।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায়ের তারিখ ধার্য করেন। প্যানেলের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

বহুল আলোচিত এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ এনে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছিল প্রসিকিউশন।

অন্যদিকে, আসামিদের নির্দোষ দাবি করে খালাস প্রার্থনা করেন তাদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী। এছাড়া, রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষেও খালাস চান তার আইনজীবী।

এই মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস. এইচ. তামিম। এছাড়া প্রসিকিউটর বি. এম. সুলতান মাহমুদ, শাইখ মাহদি ও আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্য প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন। পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন, আর রাজসাক্ষী মামুনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

ঐতিহাসিক এই মামলায় সাক্ষ্য দেন গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের পিতাসহ স্বজনহারা অনেক পরিবার। স্টার উইটনেস হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনের নেতা নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। সর্বমোট ৫৪ জন সাক্ষী এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

পরবর্তীতে দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হন সাবেক আইজিপি মামুন।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল বলে ট্রাইব্যুনালে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। বর্তমানে দু’টি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব মামলার বিচার চলছে।