শিরোনাম

মোশতাক আহমদ
ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্য পুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক পাটওয়ারী বলেছেন, জানুয়ারি মাসের ১ তারিখে সারাদেশের স্কুলে শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যপুস্তক পৌঁছে দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিজ দপ্তরে বাসস’কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, এবছর প্রাথমিক, ইবতেদায়ী এবং মাধ্যমিকের জন্য ৩০ কোটি বই ছাপানোর প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে। সপ্তম এবং অষ্টম শ্রেণিতে কিছুটা কম থাকলেও বাকি সব শ্রেণিতেই শতভাগ শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছানো সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, আমরা এনসিটিবির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই একটা ভালো সংবাদ দিয়েছি মহান বিজয় দিবসের প্রাক্কালে। তা হলো, আমাদের প্রাথমিকের প্রায় সাড়ে ৮ কোটিরও বেশি বই আমরা কমপ্লিট করতে পেরেছি এবং সেটা আমরা সবাইকে জানিয়েছি।
তিনি বলেন, শিক্ষাবর্ষ শুরুর আগেই যে এতোগুলো বই ছাপানোর কাজ করা সম্ভব হয়েছে, সেটা আমাদের সরকার তথা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে আমাদের কর্মকর্তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং এনসিটিবি ও প্রেস মালিক যারা আছেন, সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সম্ভব হয়েছে।
এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের কিছু কিছু জায়গা থেকে অলরেডি খবর পেয়েছি যে, আমাদের বইগুলো স্কুলেও দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে ভালো খবর হলো যে, বইয়ের মানের বিষয়ে সবার কাছে ভালো রেসপন্স পাচ্ছি—খুব ভালো বই হয়েছে।
তিনি বলেন, এবার কাগজ এবং প্রিন্টিং কোয়ালিটি অনেক ভালো হয়েছে অর্থাৎ প্রাথমিকের শতভাগ বই আমরা ইনশাল্লাহ পহেলা জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীদের হাতে দিতে পারব।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ স্কুলে বই চলে যাবে এবং এই বই আমরা ডিস্ট্রিবিউট করতে পারব।
মাহবুবুল হক পাটোয়ারী বলেন, মাধ্যমিকে যেটা আমরা প্ল্যান করছি এখন সেটা হচ্ছে—আমাদের ক্লাস সিক্স এবং ক্লাস নাইনে পহেলা জানুয়ারিতে শতভাগ বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দিতে পারব। সেভেন এবং এইটে আমাদের রিটেন্ডার করতে হয়েছিল এবং পিপিআরের যে সময়সীমা আছে, তাতে আমাদের প্রায় জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত সময় দিতে হয়েছে।
তারপরও বলবো আমরা কিন্তু পরিকল্পনা করে রেখেছি জানুয়ারিতে অর্ধেক বই শিক্ষার্থীদের হাতে সরবরাহ করতে পারব।
তিনি বলেন, প্রত্যেক শিক্ষার্থী যেন বই পায়, সেটা আমরা নিশ্চিত করবো।
তিনি বলেন, আমাদের চেষ্টা আছে যে, আমরা আশা করছি— অন্তত সফট কপি বইগুলো যেন অ্যাভেইলেবল হয় ক্লাস শুরুর আগে। আমরা আশা করছি সেটা ২৮ ডিসেম্বর আমাদের উপদেষ্টা মহোদয় এই সবগুলো বই আপলোড করবেন আমাদের এনসিটিবির ওয়েবসাইটে, আমি সে কাজটা করছি।
তিনি বলেন, এনসিটিবি থেকে এ বছর প্রায় ৩০ কোটির উপরে বই ছাপাতে হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে ইবতেদায়ীর ৩ কোটি ১১ লাখ বই, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৪ কোটি ১১ লাখ, সপ্তম শ্রেণিতে ৪ কোটি ১৬ লাখ, অষ্টম শ্রেণিতে ৪ কোটি ২ লাখ, নবম শ্রেণিতে ৫ কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার এবং প্রাক প্রাথমিক এবং প্রাথমিকে আছে মোট ৫ কোটি ৫৯ লাখ বই।
তিনি বলেন, এবারের বইয়ের কাগজে উন্নত মানের কাগজ দেওয়া হয়েছে, ছাপাও ভালো হয়েছে । বইয়ের অবস্থা আমি মনে করি যে, গত আট থেকে ১০ বছরের মধ্যে এবছর আমরা খুব ভালো একটা অবস্থানে আছি এবং বইয়ের গুণগত মান যেন ভালো হয়, সেটার জন্য মনিটরিং টিম আছে। এনসিটিবির পক্ষ থেকে প্রত্যেকটা প্রেসে আমাদের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মনিটরিং কাজ করছেন। আমাদের পিডিআই এজেন্ট আছে, তারাও কাজ করছে। মন্ত্রণালয় থেকে ট্রাস্ক ফোর্স করা হয়েছে, তাদেরকেও বিভিন্ন প্রেসের দায়িত্ব দেওয়া আছে। উনারা অন্য কাজগুলো করছেন এবং যখন যেখানে সমস্যা দেখছি, আমরা সেখানে ব্যবস্থা নিচ্ছি।