শিরোনাম
ঢাকা, ১৬ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): ভিয়েতনাম প্রথমবারের মতো সরাসরি কিউবার জমিতে চাষ করে দেশটির তীব্র খাদ্য সংকট মোকাবিলায় সহায়তা করছে।
কিউবা সরকার ভিয়েতনামের ফুজিনুকো গ্রুপের সহায়ক প্রতিষ্ঠান অ্যাগ্রি ভ্যাম-কে ১ হাজার হেক্টর (২,৪৭০ একর) আবাদযোগ্য জমি দিয়েছে, যা রাজধানী থেকে ১১৮ কিলোমিটার পশ্চিমে লস পালাসিওসে অবস্থিত। এর আগে ভিয়েতনাম কিউবাকে ধান চাষে পরামর্শ দিয়েছিল। তবে এবারই প্রথম কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সরাসরি কিউবার জমিতে ধানচাষ করছে।
খবর এএফপি’র।
হাভানা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিউবান অর্থনীতি গবেষণা কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে কিউবার মোট কৃষি উৎপাদন ৫২ শতাংশ হ্রাস পাওয়ার পর এই পদক্ষেপ অনুমোদন করা হয়।
এর মধ্যে ধান উৎপাদনের অবস্থা শোচনীয়। ২০১৮ সালে মোট ধান উৎপাদন ছিল ৩ লাখ টন, যা কোভিড মহামারির সময় ২০২১ সালে নেমে আসে মাত্র ৫৫ হাজার টনে। কর্তৃপক্ষ বলছে, উৎপাদন ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার হচ্ছে। ধান কিউবার প্রধান খাদ্য। যেখানে একজন ব্যক্তির বছরে গড়ে ৬০ কেজি (১৩২ পাউন্ড) ধান প্রয়োজন হয়।
আশাব্যঞ্জক ফলন, চ্যালেঞ্জও কম নয় :
মে মাসে সংবাদকর্মীদের এক সফরকালে অ্যাগ্রি ভ্যামের এক প্রতিনিধি জানান, এখন পর্যন্ত প্রতি হেক্টরে ফলন সাত টন, কিন্তু আমরা আরও চাই।
তবে এই পরিমাণ কিউবান কৃষকদের প্রতি হেক্টরে গড় উৎপাদনের চেয়ে অনেক বেশি।
ভিয়েতনামও ১৯৮০’র দশকে কিউবার মতো খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হয়েছিল। বর্তমানে দেশটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ধান রপ্তানিকারক এবং অন্যান্য ধান উৎপাদনকারী দেশের জন্য মূল্যবান পরামর্শদাতা।
প্রতিনিধি বলেন, আবহাওয়া ও তাপমাত্রা কৃষির জন্য খুব ভালো। তবে কিউবান কৃষকদের প্রয়োজনীয় সারসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণের অভাব রয়েছে।
কিউবান অর্থনীতিবিদ ওমার এভারলেনি পেরেজসহ কয়েকটি সূত্র বলেছে, যদিও অ্যাগ্রি ভ্যাম কিছু উপকরণ আমদানি করতে পারে, তবুও জ্বালানির ঘাটতি, পরিবহন সমস্যা এবং তহবিল জমানো (ফ্রিজ) থাকার মতো প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।
পেরেজ বলেন, অ্যাগ্রি ভ্যাম ও কিউবার অন্যান্য বিদেশি প্রতিষ্ঠান লাভ করলেও তারা তা বিদেশে পাঠাতে পারে না, কারণ ব্যাংকের কাছে তারল্য নেই, বৈদেশিক মুদ্রাও নেই।
ভিয়েতনামের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম মে মাসে জানায়, দেশটির উপ-কৃষিমন্ত্রী নুয়েন কোয়াক ত্রি হাভানা সরকারকে ভিয়েতনামী কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগে বাধা দূর করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এএফপি অ্যাগ্রি ভ্যাম ও কিউবান কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনো সাড়া পায়নি।
বিদেশি বিনিয়োগের তীব্র প্রয়োজন :
কিউবা বর্তমানে তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে এবং মরিয়া হয়ে বিদেশি বিনিয়োগ চাইছে। ভিয়েতনামসহ মিত্র দেশগুলো আগ্রহ দেখিয়েছে।
জুলাই মাসে কিউবার প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল মাররোরো ক্রুজ ঘোষণা করেন যে হাভানা বিদেশি বিনিয়োগ সক্রিয় করতে ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং হোটেল খাতে সম্পূর্ণ বিদেশি মালিকানাধীন কোম্পানি অনুমোদন দিয়েছে।
তিন বছরের প্রতিশ্রুতির পর, গত মে মাসে রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি চেরনিশেঙ্কো জানান, রুশ ব্যবসায়ীরা কিউবায় ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চায় এবং তাদের জন্য রাশিয়া অগ্রাধিকারমূলক অর্থায়ন হার দেবে।
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, এখনও অনেক কাজ বাকি। জাদুর মতো মুহূর্তেই সবকিছু করা সম্ভব এমনটা আশা করা ঠিক নয়।