বাসস
  ১৫ আগস্ট ২০২৫, ১৭:৫৫

সমঝোতা ছাড়াই শেষ হলো জাতিসংঘের প্লাস্টিক দূষণবিরোধী চুক্তি আলোচনা

ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা, ১৫ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক দূষণ রোধে বাধ্যতামূলক একটি চুক্তির লক্ষ্যে জেনেভায় জাতিসংঘের সদর দফতরে আয়োজিত ১০ দিনব্যাপী আলোচনা আজ শুক্রবার শেষ হয়েছে। তবে এ চুক্তি নিয়ে কোনো সমঝোতা বা সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি।

জেনেভা থেকে এএফপি জানায়, ১৮৫টি দেশের আলোচকরা রাতভর  চেষ্টা করেন, যাতে তারা প্লাস্টিক উৎপাদন সীমিত করার মতো সাহসী পদক্ষেপ নিতে চাওয়া দেশগুলোর এবং বাণিজ্যিকভাবে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে  সমঝোতায় পৌঁছাতে যায়। চুক্তিটি শুধু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মধ্যে সীমিত রাখতে চায় তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো।

গত ৫ আগস্ট শুরু হওয়া এই আলোচনায় গতকাল বৃহস্পতিবার নির্ধারিত সময়সীমা পার হওয়ার পরও কোনো চুক্তি করা সম্ভব হয়নি। আলোচনা শেষে দেশগুলোর প্রতিনিধিরা জাতিসংঘের ‘পালেই দে ন্যাশন’-এর প্রধান সভাকক্ষে জমায়েত হয়ে অচলাবস্থা নিয়ে ভাবেন এবং ভবিষ্যতে কীভাবে এগোবেন, সে সম্পর্কে আলোচনা করেন।

আলোচনায় অংশ নেওয়া নরওয়ের একজন প্রতিনিধি বলেন, ‘আমরা প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে এখানে কোনো চুক্তি করতে পারিনি।’

কিউবার প্রতিনিধি বলেন, ‘আমরা একটি ঐতিহাসিক সুযোগ হারিয়েছি। কিন্তু আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে এবং জরুরি ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। পৃথিবী এবং বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য এই চুক্তির প্রয়োজন।’

৩৯টি ছোট দ্বীপরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পালাউ এই আলোচনায় যথেষ্ট অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশা জানিয়ে  বলেছে, আমরা বারবার এ ধরনের আলোচনায় আমাদের অর্থ এবং জনশক্তি বিনিয়োগ করেছি। কিন্তু আমাদের জনগণ যথেষ্ঠ অগ্রগতি দেখেনি।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ব্রিটেন, কানাডা এবং আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশের সমন্বয়ে গঠিত জোট ‘হাই অ্যাম্বিশন কোয়ালিশন’ প্লাস্টিক উৎপাদন কমানো এবং প্লাস্টিকের মধ্যে ব্যবহৃত বিষাক্ত রাসায়নিকের ব্যবহার নিষিদ্ধের প্রস্তাব দেয়। অন্যদিকে, তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট ‘লাইক-মাইন্ডেড গ্রুপ’ চায় চুক্তিটির পরিধি আরো সীমিত রাখতে। এ জোটে সৌদি আরব, কুয়েত, রাশিয়া, ইরান ও মালয়েশিয়া রয়েছে।

কুয়েত বলেছে, আমাদের মতামত প্রতিফলিত হয়নি। একটি সম্মত পরিধি ছাড়া এই প্রক্রিয়া সঠিক পথে চলতে পারবে না এবং এটি একটি পিচ্ছিল ঢালে পরিণত হতে পারে।

বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ৪০০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদিত হয়, যার অর্ধেকই একবার ব্যবহারের পর ফেলে দেওয়া হয়। যদিও ১৫ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য পুনরায় ব্যবহারের জন্য সংগ্রহ করা হয়। তবে মাত্র ৯ শতাংশই মূলত রিসাইকেল হয়। প্রায় অর্ধেক বা ৪৬ শতাংশ ভাগাড়ে ফেলা হয়, ১৭ শতাংশ পোড়ানো হয় এবং ২২ শতাংশের ভুল ব্যবস্থাপনা হয় এবং সেগুলো বর্জ্য হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে।