শিরোনাম
ঢাকা, ১১ জুন, ২০২৫ (বাসস) : একটি শিশু অধিকার বিষয়ক এনজিও বুধবার জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ‘অসীম ও নিয়ন্ত্রণহীন বিস্তার’ শিশু ও কিশোরদের মধ্যে বিশ্বজুড়ে এক নজিরবিহীন মানসিক স্বাস্থ্য সংকট তৈরি করছে।
এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরি ও সমন্বিত বৈশ্বিক পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে।
আমস্টারডাম থেকে এএফপি জানায়, কিডসরাইটস প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী প্রতি সাতজন শিশু এবং কিশোর-কিশোরীর মধ্যে একজন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে, যেখানে বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যার হার ১৫-১৯ বছর বয়সীদের মধ্যে প্রতি লাখে ছয়জন।
আমস্টারডামভিত্তিক সংগঠনটি জানিয়েছে, আত্মহত্যার এসব উচ্চহারও আসলে ‘হিমশৈলের চূড়া’ মাত্র। কারণ, সামাজিক কলঙ্কের কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ব্যাপকভাবে গোপন রাখা হয় ও কম রিপোর্ট হয়।
কিডসরাইটস চেয়ারম্যান মার্ক ডুলার্ট বলেন, ‘এই বছরের প্রতিবেদনটি একটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার মতো সতর্কবার্তা যা আমরা আর উপেক্ষা করতে পারি না’।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের শিশুদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সংকট এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখান থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। এই সংকটকে আরও ঘনীভূত করছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নিয়ন্ত্রণহীন বিস্তার, যেখানে শিশুদের নিরাপত্তার চেয়ে ব্যবহারকারীর সম্পৃক্ততাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সমস্যাযুক্ত’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার মধ্যে অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহার এবং আত্মহত্যার প্রচেষ্টার সরাসরি যোগসূত্র রয়েছে।
সংগঠনটি সতর্ক করে বলেছে, তবে, সম্মিলিত নিষেধাজ্ঞা সমাধান নয়।
অস্ট্রেলিয়া, ১৬ বছরের কম বয়সীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নিষিদ্ধ করার জন্য একটি আইন পাস করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এ ধরনের সামগ্রিক নিষেধাজ্ঞা শিশুদের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিশেষ করে তথ্য জানার অধিকার লঙ্ঘন করতে পারে।’
সংগঠনটি বলেছে, শিশুদের ওপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব ভালোভাবে বুঝতে বিশ্বব্যাপী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা দরকার। পাশাপাশি শিশুদের ভালো শিক্ষা দিতে হবে এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ভালো প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
এই প্রতিবেদনে নেটফ্লিক্সের জনপ্রিয় সিরিজ ‘অ্যাডোলেসেন্স’ এর জনপ্রিয়তা তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে শিশুদের অনলাইনে দেখা কিছু ক্ষতিকর বিষয়বস্তু তুলে ধরা হয়েছে।
ডুলার্ট বলেন, ‘এই মিনি-সিরিজটি’ শিশুদের জন্য ক্ষতিকর বিষয়গুলো সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা তৈরি করেছে, তবে কেবল সচেতনতাই যথেষ্ট নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের স্পষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে ডিজিটাল বিপ্লব, পৃথিবীর ২২০ কোটি শিশুর কল্যাণ বাড়ায়, বিপদে না ফেলে।’
তিনি আরো বলেন, ‘অর্ধেক ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এখন শেষ।’