শিরোনাম
ঢাকা, ৩০ মে, ২০২৫ (বাসস): নাইজেরিয়ার মধ্যাঞ্চলীয় শহর মোকওয়ায় প্রবল বর্ষণের ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৩৬ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এছাড়া অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন ।
শুক্রবার দেশটির জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থার এক মুখপাত্র এ তথ্য জানিয়েছেন।
নাইজার রাজ্যের মোকওয়া শহরে বুধবার গভীর রাতে ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যায় ৫০টিরও বেশি ঘরবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে যায়। এতে অনেক বাসিন্দা ডুবে মারা যান এবং এখনো অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে স্টেট ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (এসইএমএ)।
সংস্থাটির মুখপাত্র ইব্রাহিম আওদু হুসেইনি বলেন, শুক্রবার সকালে আরও ১১টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, এ নিয়ে মোট নিহতের সংখ্যা ৩৬ জনে দাঁড়িয়েছে ।
উদ্ধারকারীরা নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান হুসেইনি। তিনি বলেন, আমরা ধারণা করছি, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ বিভিন্ন স্থানে পৃথক উদ্ধারকারী দল কাজ করছে।
মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত নাইজেরিয়ায় বর্ষাকাল। এ সময়টাতে প্রায় প্রতি বছরই দেশটিতে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। অপর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা, জলাধার ও খাল-নালায় আবর্জনা ফেলা এবং জলাধার বা নালা দখল করে গৃহ নির্মাণের কারণে বন্যা পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠছে।
এর আগে, বুধবার থেকে শুক্রবারের মধ্যে দেশের ৩৬টি রাজ্যের মধ্যে ১৫টিতে ‘আকস্মিক’ বন্যার পূর্বাভাস দিয়ে সতর্ক করে আবহাওয়া সংস্থা, যার মধ্যে নাইজারও ছিল।
নাইজেরিয়ায় চলতি বছরের বর্ষা মৌসুম মাত্র শুরু হয়েছে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ইতোমধ্যেই চরম ও অস্বাভাবিক আবহাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতি বছর ভারী বর্ষণ ও দুর্বল অবকাঠামোর কারণে সৃষ্ট বন্যায় পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়।
২০২৪ সালে বন্যায় ১২০০ জনের বেশি প্রাণ হারান এবং ১২ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হন। এটি দেশটির সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ বন্যা হিসেবে বিবেচিত।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার তথ্যমতে, ওই সময় ৩৫টি রাজ্যের মধ্যে অন্তত ৩১টিতে ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং ১৪ লাখ হেক্টরের বেশি কৃষিজমি ধ্বংস হয়।
এর আগে ২০২২ সালের বন্যায়ও পাঁচ শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়।
নাইজার অঞ্চলটি বেশ কয়েক বছর ধরে জঙ্গি ও সশস্ত্র ডাকাত গোষ্ঠীর সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এসব গোষ্ঠী গ্রামের পর গ্রামে হামলা চালিয়ে বাসিন্দাদের হত্যা ও অপহরণ করে থাকে।