শিরোনাম
ঢাকা, ২৮ মে, ২০২৫ (বাসস) : বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করে তাদের ভিসা প্রক্রিয়া স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন। চীনের কড়া সমালোচনার মধ্যেই এই সিদ্ধান্তে সই করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায় মঙ্গলবার স্বাক্ষরিত এক কূটনৈতিক তারবার্তায় বলা হয়েছে, মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোকে ‘অতিরিক্ত কোনো ছাত্র বা বিনিময় ভিসার সাক্ষাৎকারের সময়সূচি নির্ধারণ না করার’ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে।
এই নির্দেশের মাধ্যমে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কার্যক্রমের উপর নজরদারি আরও জোরদার করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন এর আগেও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করতে বাধা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে অনেক শিক্ষার্থীই গাজায় যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন—যাদের ভিসা বাতিল ও দেশ থেকে বিতাড়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এদিকে, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বুধবার বলেন, ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের, বিশেষত চীনা শিক্ষার্থীদের, আইনি অধিকার ও স্বার্থের পরিপন্থী।
চীনের বহু শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। তবে এমন পরিস্থিতিতে জাপান ও হংকংসহ একাধিক দেশ ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তাইওয়ানের এক পিএইচডি শিক্ষার্থী, যিনি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, বলেন, ‘আমি অনিশ্চয়তায় ভুগছি। এখন শুধু অপেক্ষা করা ছাড়া কিছুই করার নেই।’
ভিসা স্থগিতের পাশাপাশি হার্ভার্ডের সব সরকারি অর্থায়ন বন্ধেরও ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছেন। এদিন হার্ভার্ডের স্নাতক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে হাজারো শিক্ষার্থী ও অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন।
প্রশাসনের দাবি, হার্ভার্ড ‘উইক’ আদর্শ ও ইহুদি-বিদ্বেষ ছড়ায়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হার্ভার্ডের নিয়োগ ও ভর্তি নীতির ওপর নজরদারি করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট বলেন, সরকার এখন ‘জাতীয় অর্থনীতিতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে’ ইলেকট্রিশিয়ান ও প্লাম্বার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে অর্থায়ন বাড়াবে।
ব্রিটিশ শিক্ষার্থী জ্যাক বলেন, ‘আমি জানি না, এখানে পিএইচডি করব কি না। ছয় বছর অনেক লম্বা সময়।’
হার্ভার্ড ইতোমধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছে। এছাড়া ৯ জুন হার্ভার্ডের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন আদালতে আইনি নথি জমা দেবে বলে জানিয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা অনুরিমা ভার্গভা।
মার্কিন গণমাধ্যম জানায়, প্রশাসন হার্ভার্ডের ১০০ মিলিয়ন ডলারের সরকারি চুক্তি বাতিল করেছে। এছাড়া বিলিয়ন ডলারের গবেষণা অনুদান স্থগিত এবং মিলিয়ন ডলারের আরও চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।
বিদেশি শিক্ষার্থী নিয়োগ ও স্পন্সরের অধিকার হারানো ঠেকাতে এবং তহবিল বাতিল প্রতিরোধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।
ট্রাম্প সোমবার বলেন, ‘এই বিদেশি শিক্ষার্থীদের অনেকেই উগ্রবাদী ও সমস্যা তৈরির লোক।’