বাসস
  ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৬:২৮
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৬:৩১

বয়সভিত্তিক দল থেকে জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখেন ফাহিম

দিনাজপুর, ১১ নভেম্বর ২০২৫ (বাসস) : দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার রাণীর-বন্দরের কৃতি সন্তান মো: আব্দুল রিয়াদ ফাহিম বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের এখন অপরিহার্য্য একটি নাম।

ফাহিম বয়সভিত্তিক জাতীয় পর্যায়ে খেলার সুযোগ পাওয়ায় এলাকাজুড়ে আনন্দের জোয়ার বইছে। ফাহিমের এই অসাধারণ সাফল্য শুধু তার পরিবারের জন্য নয়, বরং পুরো এলাকার মানুষের জন্য গর্বের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ফাহিম দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলার আলোকডিহি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তার এই অর্জনকে অনুপ্রেরণা হিসেবে বিবেচনা করছে। তাকে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সম্মাননা ও শুভেচ্ছাও জানানো হয়েছে। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুল হাই বলেন, "ফাহিমের এই সাফল্য আমাদের বিদ্যালয়ের জন্য গৌরবের বিষয়। ফাহিম আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গৌরব বৃদ্ধি করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও সাফল্য বয়ে আনবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।"

ফাহিম ছোটবেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি প্রচন্ড আগ্রহী ছিলেন। জেলার চিরিরবন্দর উপজেলা মাঠে প্রতিদিন নিয়মিত অনুশীলনের মধ্য দিয়ে সে নিজেকে একজন দক্ষ ফুটবলার হিসেবে গড়ে তুলেছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানায়, ফাহিম শুধু পড়াশুনা নয়, খেলার মাঠেও সমান দক্ষ হিসাবে নিজেকে প্রমান করেছে। তার এই প্রতিভা ও কঠোর পরিশ্রমের ফলস্বরূপ সে আজ জাতীয় পর্যায়ে খেলার সুযোগ পেয়ে দিনাজপুর জেলার নাম উজ্জ্বল করেছে।

চিরিরবন্দর উপজেলার রানীর-বন্দর গ্রামের মোঃ আব্দুল মজিদের পুত্র মোঃ আব্দুল রিয়াদ ফাহিম।

ফাহিমের বাবা-মা সন্তানের এই সাফল্যে অত্যন্ত আনন্দিত। তার বাবা মোঃ আব্দুল মজিদ বলেন, "আমাদের ছেলে ছোটবেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি আগ্রহী ছিল। শৈশব থেকেই ফুটবল খেলায় কঠোর পরিশ্রম করেছে।  আল্লাহর রহমতে আজ সে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েছে। আমরা দু'জনেই ফাহিমের জন্য দোয়া করছি, সে যেনো আরও সফলতা অর্জন করতে পারে।" 

ফাহিমের রাহেনা বেগম বলেন, আমি মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রাণ খুলে আমার সন্তান ফাহিমের জন্য সব সময় দোয়া করছি। সে যেনো এই ফুটবল খেলার মাধ্যমে তার এলাকার ও দেশের জন্য সুনাম অর্জন করতে পারে, এটাই আমার বড় চাওয়া।

ফাহিম বয়সভিত্তিক জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাওয়ায় এলাকার মানুষ আনন্দ-উদযাপন করেছে। এ বছরের মে মাসে ফাহিমের জাতীয় দলে সুযোগ পাবার খবর পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এর পর থেকেই জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার তথা রাণীর-বন্দরে মহা-উৎসবের আমেজ বিরাজ করছিল। এলাকার মানুষজন তাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। তার এই কৃতিত্বে বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। এলাকার ফুটবলপ্রেমীরা আশা করছেন, ফাহিম ভবিষ্যতে দেশের জন্য আরো বড় সাফল্য অর্জন করতে পারবে, দেশের নাম উজ্জ্বল করবে।

এই তরুণ ফুটবলার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে বলেন, ‘‘ছোটবেলা থেকেই আমার ফুটবল খেলার প্রতি বেশি আগ্রহ ছিল। এই আগ্রহ থেকেই আমি ফুটবল খেলাকে নিজের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে নিয়েছি। আমি সবসময় স্বপ্ন দেখতাম জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাঠে নামার। আজ সেটা আংশিক সত্যি হলো। আমি এখন আরও বেশি পরিশ্রম করতে চাই, যেন একদিন জাতীয় দলে খেলতে পারি এবং দেশকে গর্বিত করতে পারি।”

ফাহিম আরো বলেন, ‘বিশ্বব্যপী এবং আমাদের দেশেও ফুটবল একটি জনপ্রিয় খেলা। এই খেলা দর্শকরা উপভোগ করে খুব বেশি আনন্দ পায়। এই জন্য ফুটবল খেলার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি বেশি হয়েছে। ভবিষ্যতে সকলের সহযোগিতায় একজন ভালো ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান, এটাই সৃষ্টিকর্তার কাছে তার প্রার্থনা।

জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাওয়া আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। আমি আমার শিক্ষক, কোচ এবং পরিবারের সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ভবিষ্যতে দেশের জন্য আরও ভালো খেলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য অর্জন করতে চাই।’

মো: আব্দুল রিয়াদ ফাহিমের এই সাফল্য জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার রাণীর-বন্দরসহ সমগ্র জেলার জন্য একটি বড় প্রাপ্তি। তার এই সাফল্য ভবিষ্যতে এলাকার আরও ফুটবলারদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
ফাহিমের এই অর্জন শুধু তার পরিবারের নয়, পুরো দিনাজপুরের গর্ব। তার সফলতার গল্প আগামী দিনের ফুটবলারদের জন্য এক উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে থাকবে।