বাসস
  ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৫:২৪

ক্রিকেটারদের সারা বছর অনুশীলনে রাখতে উদ্যোগ নিয়েছে বিসিবি

ঢাকা, ২৮ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : ক্রিকেটারদের সারা বছর খেলার মধ্যে ব্যস্ত রাখতে দেশের বিভিন্ন ভেন্যুতে বিশ্বমানের সুযোগ সুবিধা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটের জন্য বাংলাদেশের এখন তিনটি ভিন্ন দল রয়েছে। কিন্তু যখন একটি নির্দিষ্ট ফরম্যাট নিয়ে কিছু খেলোয়াড় ব্যস্ত থাকে, তখন অন্য খেলোয়াড়রা অলস সময় কাটায়।

এছাড়া বেশ কিছু খেলোয়াড় আছে যারা জাতীয় দলে সুযোগের অপেক্ষায় আছেন। তাদের নিয়ে পরিকল্পনা করা এবং অন্যান্য বিষয়ে কাজ করার কোন সুযোগ-সুবিধা নেই। 

তাই সারা বছর বাংলা টাইগার্স ক্যাম্প পরিচালনা করে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করার পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

ক্যাম্পের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কোচ সোহেল ইসলামকে। মূলত এই ক্যাম্পে জাতীয় পুলে থাকা ক্রিকেটারদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। যেখানেই সব ধরণের কাজ এবং ইনডোর-আউটডোর বা টেকনিক্যাল-মানসিক বিষয়ে যেকোন কিছুর প্রয়োজন হবে তখন বছরব্যাপী কর্মসূচির অংশ হবে বাংলা টাইগার্স।

কাজের ধরণ ব্যাখ্যা করে সোহেল বলেন, ‘এই প্রকল্পের নাম বাংলা টাইগার্স। এই ক্যাম্পের মাধ্যমে আমরা সারা বছর জাতীয় পুলে থাকা ক্রিকেটারদের সাথে কাজ করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা টি-টোয়েন্টি, ওয়ানডে বা টেস্টের জন্য আলাদাভাবে অনুশীলন করবে। কখনও বড় দলে, কখনও ছোট দলে, আবার কখন অন্যান্য দলেও। যাতে সারা বছর ধরে প্রস্তুতি নিতে পারে এবং সবসময় যাতে তারা প্রস্তুত থাকে সেটি নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হবে।’

বাঁ-হাতি ব্যাটার সাদমান ইসলামের উদাহরণ টেনে সোহেল বলেন, একজন টেস্ট ওপেনার হওয়ায় অন্য ফরম্যাটের জন্য বিবেচিত নন সাদমান।

যেহেতু সম্প্রতি টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত বাংলাদেশ, তাই সাদমানকে ফিট রাখতে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে।

আগামী নভেম্বরে টেস্ট খেলবে জাতীয় দল। তার আগ পর্যন্ত কোন খেলা নেই সাদমানের। 

টেস্ট ছাড়া অন্য দুই ফরম্যাট থেকে ইতোমধ্যে অবসর নিয়েছেন মুশফিকু রহিম। শুধুমাত্র টেস্ট ফরম্যাটে বর্তমানে নিয়মিত আছেন- মোমিনুল হক, খালেদ আহমেদ বা এবাদত হোসেনের মতো খেলোয়াড়রা। 

সোহেল জানান, বাংলা টাইগার্স ক্যাম্পে সব প্রশ্নের উত্তর থাকবে। তিনি বলেন, ‘এসব খেলোয়াড়দের এখন আর চিন্তা করতে হবে না। বাংলা টাইগার্স ক্যাম্পের মাধ্যমে তাদের ক্রিকেটের মধ্যে রাখতে অনুশীলনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই অনুশীলনগুলো নির্দিষ্ট এবং ব্যক্তিগত। যদি কারও কোন ঘাটতি থাকে, তাহলে বাংলা টাইগার্স কি সমাধান করবে? সাদমানের ডিফেন্স ভালো হয় তাহলে তাকে দীর্ঘ সময় ডিফেন্স অনুশীলন করতে হবে না। অন্যান্য নির্দিষ্ট ক্ষেত্র নিয়েও তার কাজ করতে হবে।’

সোহেল বলেন, ‘আমরা এমন বিষয় নিয়েই কাজ করছি যেখানে উন্নতি প্রয়োজন। যেখানে দক্ষতা পরিবর্তন ও সমন্বয় প্রয়োজন। এখন আমরা এটি ইনডোরে করছি। এরপর আমরা নিজেদের মধ্যে ম্যাচ খেলব।’

সোহেল জানান, ম্যাচ পরিস্থিতি বিবেচনা করে নতুন বল বা পুরানো বলে অনুশীলন চলবে। প্রতিটি কাজ চার্ট করা হবে। কাজের চাপ ব্যবস্থাপনার জন্য নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ক্রিকেটারদের কাজ অনুশীলন এবং কোচদের কাজ হবে লক্ষ্যে পৌঁছানো। খেলোয়াড়দের চাহিদাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে বাংলা টাইগার্স ক্যাম্প। 

তিনি আরো বলেন, ‘যখন কেউ অনুশীলনে আসে, সে ব্যাটার হোক বা বোলার, আমরা তাকে তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করার চেষ্টা করি। এটি প্রযুক্তিগত হতে পারে, আবার মানসিকও হতে পারে। যদি আমরা মনে করি আমাদের অন্যান্য ক্ষেত্রগুলোও স্পর্শ করা দরকার আমরা তা করব। আবার যদি কৌশলগত উন্নতির প্রয়োজন হয় তাহলে আমরা সেটিও সঠিকভাবে করতে পারব। এসব নিয়ে আমরা সামনে এগিয়ে যাব। আমাদের কঠোর অনুশীলন করতে হবে, ঘাম ঝরাতে হবে, যদি কোনও উদ্দেশ্য না থাকে তাহলে অগ্রগতি বোঝা যাবে না। আমরা এই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই কাজ করছি।’

সোহেল বলেন, ‘ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী আমরা নতুন বল এবং পুরাতন বলে অনুশীলন করব। খেলোয়াড়দের জানতে হবে ম্যাচের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কিভাবে খেলতে হয়। খেলোয়াড়দের এই বিষয়গুলো বাংলা টাইগার্স ক্যাম্প আরও বড় আকারে শেখাবে।’