বাসস
  ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১৮:৫৮

মোংলা বন্দরে এলসিএল কার্গো হ্যান্ডলিং চালু

মোংলা বন্দর। ছবি : বাসস

খুলনা, ২৩ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ প্রতীক্ষিত লেস-দ্যান-কনটেইনার লোড (এলসিএল) কার্গো হ্যান্ডলিং ব্যবস্থা চালু করেছে। যা ছোট-বড় সকল ধরনের আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের জন্য নতুন সুযোগের দ্বার উন্মোচন করেছে।

এর ফলে এখন থেকে ব্যবসায়ীরা যৌথ কনটেইনার ব্যবহার করে ছোট চালান পাঠাতে পারবেন। ফলে সম্পূর্ণ একটি কনটেইনারের খরচ বহনের প্রয়োজন হবে না। আমদানি করা পণ্যও বন্দরের ইয়ার্ডে সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের মাধ্যমে ছাড় করা যাবে।

এর আগে কেবল ফুল কনটেইনার লোড (এফসিএল) ব্যবস্থা চালু ছিল, যার ফলে অনেক ছোট ব্যবসায়ী বাদ পড়েছিলেন যারা একটি পূর্ণ কনটেইনার পূরণ করার সামর্থ্য রাখতেন না। ব্যবসায়ী মহল দীর্ঘদিন ধরে এলসিএল সুবিধা চালুর দাবি জানিয়ে আসছিল।

মোংলা বন্দর কাস্টমস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন গত জুন মাসে বন্দর চেয়ারম্যানের কাছে লিখিতভাবে  অনুরোধ জানানোর পর এই দাবি জোরদার হয়। অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মো. মোশারফ হোসেন সম্প্রতি বন্দর পরিদর্শনের সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খানের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেন এবং ইতিবাচক সাড়া পান।


অবশেষে, ৭ আগস্ট বন্দরের ট্রাফিক বিভাগের উপপরিচালক মো. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের এলসিএল সুবিধার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়।

উপপরিচালক (ট্রাফিক) মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘এলসিএল আমদানি ও রপ্তানি সহজতর করার জন্য ওয়্যারহাউজ ব্যবহারের সুযোগ, লোডিং ও আনলোডিং শেড, ফিজিক্যাল পরিদর্শন এবং ডেলিভারি সুবিধাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা ব্যবসায়ীদের এই সুবিধা গ্রহণের জন্য উৎসাহিত করছি।’

কাস্টমস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মোশারফ হোসেন এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘অনেক ছোট ছোট ব্যবসায়ী যৌথ কনটেইনারে পণ্য আমদানি করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু এলসিএল না থাকায় তারা মোংলা বন্দর ব্যবহার করতে পারছিলেন না। আমাদের দীর্ঘ দিনের দাবি অনুযায়ী এ সুবিধা চালু হওয়ায় আমরা বন্দর চেয়ারম্যান ও এনবিআর চেয়ারম্যান উভয়কেই ধন্যবাদ জানাই।’

এই ব্যবস্থার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মোংলা বন্দর উপপরিচালক মো. মাকরুজ্জামান মুন্সি বলেন, ‘এলসিএল অর্থ হলো, যদি কোনো আমদানিকারকের চালান সম্পূর্ণ কনটেইনার পূর্ণ করার মতো বড় না হয়, তবে তার পণ্য অন্যদের পণ্যের সঙ্গে একই কনটেইনারে পাঠানো যাবে। এটি একটি সাশ্রয়ী সমাধান, যা গ্রুপেজ শিপিং নামেও পরিচিত।’

তিনি আরও বলেন, বন্দর চেয়ারম্যান এলসিএল সুবিধার বিষয়টি ব্যবসায়ীদের অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছেন যাতে সবাই এ সুযোগের সুফল ভোগ করতে পারেন।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন এ ব্যবস্থা মোংলা বন্দরে আরও বেশি ব্যবসায়ীকে আকৃষ্ট করবে এবং সরকারি রাজস্ব বাড়াবে। তারা আরও আশা প্রকাশ করেন, এর ফলে দেশীয় বাজারে নিত্যপণ্যের দামও স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করতে পারে।