ঢাকা, ২৮ জুন, ২০২৫ (বাসস): যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য অগ্রগতির ফলে ওয়াল স্ট্রিটের প্রধান সূচকগুলো শুক্রবার নতুন রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বসন্তকালীন শুল্ক আরোপের পর বাজারে যে ধস নেমেছিল, তা কাটিয়ে বাজার আবার আগের উচ্চতায় ফিরে এসেছে।

নিউ ইয়র্ক থেকে এএফপি জানায়, ট্রাম্প যখন কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা বাতিলের ঘোষণা দেন, তখন নেতিবাচক প্রবণতায় চলে যাওয়া একটি রোলার-কোস্টার ধরনের লেনদেনের দিন শেষে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ও নাসডাক উভয় সূচকই সর্বকালের সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছায়।

এর আগে ইউরোপীয় বাজারগুলিও ঊর্ধ্বমুখী ছিল, যেখানে প্যারিসের সিএসি ৪০ সূচক বিলাসবহুল পণ্যের শেয়ারের ঊর্ধ্বগতির কারণে সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায়।

এই রেকর্ডগুলো বাজারে উন্নত মনোভাবের প্রতিফলন। যার পেছনে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি বাণিজ্যে আশাব্যঞ্জক অগ্রগতির প্রভাব রয়েছে।

প্রেস্টিজ ইকোনমিক্সের বিশ্লেষক জেসন শ্যাঙ্কার বলেন,  ‘বাজারে আশার আলো আছে, যদিও কিছু বিষয়ে অতিরিক্ত আশাবাদিতা থাকতে পারে। তবু সামগ্রিকভাবে ইতিবাচকতা প্রবল।”

শুক্রবার মার্কিন বাজার শক্তিশালী সূচনার মাধ্যমে লেনদেন শুরু করে এবং দুপুর পর্যন্ত ইতিবাচক থাকে। তবে ট্রাম্প যখন সামাজিক মাধ্যমে কানাডার ডিজিটাল সেবা করকে আক্রমণ করে দেশটিকে "ব্যবসার জন্য অত্যন্ত কঠিন" বলে উল্লেখ করেন, তখন বাজার কিছুটা নিম্নমুখী হয়।

তবে পরে বাজার ঘুরে দাঁড়ায় এবং দিনের শেষে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ও নাসডাক উভয় সূচকই লাভের মাধ্যমে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছায়।

ভেনচুরা ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা টম ক্যাহিল বলেন, সাম্প্রতিক কিছু বাণিজ্যসংক্রান্ত খবর আশাব্যঞ্জক, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে একটি কাঠামোগত বাণিজ্য সমঝোতার ঘোষণা।

তিনি বলেন, ‘এপ্রিলের পর থেকে বাণিজ্য বিষয়ে ক্রমাগত আরও ইতিবাচক বার্তা পাওয়া যাচ্ছে।’

এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সর্বশেষ রেকর্ড ছুঁয়েছিল ফেব্রুয়ারিতে, তবে এরপর ট্রাম্প বাণিজ্য নিয়ে তার অবস্থান কঠোর করলে বাজার চাপের মুখে পড়ে। বিষয়টি চূড়ান্ত রূপ পায় ২ এপ্রিল "লিবারেশন ডে" ঘোষণায়, যেখানে ট্রাম্প বড় ধরনের নতুন শুল্ক আরোপের অঙ্গীকার করেন।

যদিও তিনি পরবর্তীতে সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপগুলো স্থগিত রেখেছেন, তবুও তিনি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় শুল্ক কার্যকর করেন।

এতে মূল্যস্ফীতির শঙ্কা তৈরি হয়। শুক্রবার প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, ব্যক্তিগত ভোগ্যপণ্য ব্যয়ের মূল্যসূচক (পিসিই) গত মাসে এক বছর আগের তুলনায় ২.৩ শতাংশ বেড়েছে, যা বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং এপ্রিলের ২.২ শতাংশের চেয়ে সামান্য বেশি।

তবে ক্যাহিল বলেন, এখন পর্যন্ত এই শুল্কগুলো মূল্যস্ফীতিতে বড় প্রভাব ফেলেনি, যার ফলে ফেডারেল রিজার্ভ সেপ্টেম্বরে সুদের হার কমাতে পারে এমন প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে।

ক্যাহিল আরও বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি শেয়ারবাজারের গতি বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। সার্বিকভাবে বাজার পরিস্থিতি শেয়ারমূল্যের জন্য সহায়ক এবং আমি মনে করি এটি আরও ঊর্ধ্বমুখী থাকবে।