শিরোনাম

ঢাকা, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত এ্যাশেজ সিরিজের দিবা-রাত্রির দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডকে ৮ উইকেটে উড়িয়ে দিয়ে ২-০ ব্যবধানে লিড নিয়েছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া।
টেস্টের চতুর্থ দিনে ৬৫ রানের মামুলি টার্গেটে খেলতে নেমে অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ ইংলিশ পেসার গাস এ্যাটকিনসনের পঞ্চম ওভারের শেষ বলে বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন। যদিও এই লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া ২ উইকেট হারিয়েছে।
এর আগে পার্থ টেস্টে দুইদিনের মধ্যে ইংল্যান্ডকে গুড়িয়ে দিয়ে দাপটের সাথে এ্যাশেজ সিরিজ শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। এডিলেড, মেলবোর্ন ও সিডনিতে সিরিজের বাকি তিন ম্যাচেও অস্ট্রেলিয়া সুস্পষ্ট ফেবারিট হিসেবেই মাঠে নামবে।
ম্যাচ শেষে স্মিথ বলেছেন, ‘দুর্দান্ত একটি দিন। প্রথম দুইদিন কিছুটা লড়াই হয়েছে। লাইটের আলোতে আমরা যখন নতুন বল হাতে নিয়েছি তখনই ম্যাচের ভাগ্য ঘুরে যেতে থাকে।
গোলাপি বলে খেলা সবসময়ই কঠিন, প্রতি মুহূর্তে এর গতিপথ পরিবর্তিত হয় এবং তখন তার সাথে মানিয়ে নিতে হয়।’
প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড ব্যাটারদের মধ্যে জো রুট ও জ্যাক ক্রলি এবং দ্বিতীয় ইনিংসে অধিনায়ক বেন স্টোকস ও উইলস জ্যাকস ছাড়া বাকি সবারই পার্থের মত সাজঘরে ফেরার তাড়া ছিল। গ্যাবার বাউন্সি সার্ফেসে তারা বাজে শট খেলে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছে।
বোলিংয়েও নিজেদের প্রমানে ব্যর্থ হয়েছে ইংল্যান্ড। নতুন গোলাপি বলে তারা কার্যত কিছুই করতে পারেনি। অস্ট্রেলিয়ান পেস আক্রমনে প্যাট কামিন্স ও জোস হ্যাজেলউডের অনুপস্থিতি সত্বেও ইংল্যান্ডের তুলনায় তারা ভাল বোলিং করেছে।
প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড পাঁচটি ক্যাচ মিস করেছে যা দলের ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ডাররা প্রতিটি ক্যাচই লুফে নিয়েছে। প্রথম ইনিংসে স্টোকসকে দুর্দান্ত এক রান আউট করে জস ইংলিস ম্যাচের গতিপথ পাল্টে দেন।
স্টোকস বলেন, ‘অবশ্যই পুরো বিষয়টাই হতাশার। এই ম্যাচে আমরা যতবার চাপে পড়েছি তার থেকে সামলে ওঠার চেষ্টা করেছি। বিশেষ করে ম্যাচটি যেহেতু আমাদের হাতে ছিল।’
টেল এন্ডারদের কল্যাণে অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে ৫১১ রান তুলে ১৭৭ রানের লিড নেয়। এরপর তৃতীয় দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ড এক সময় ১২৮ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে। তখনো ৪৩ রানে পিছিয়ে ছিল সফরকারীরা। এই অবস্থা থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন স্টোকস ও অল-রাউন্ডার জ্যাকস। সপ্তম উইকেটে এই জুটি ৯৬ রানে ইনিংস উপহার দিলে অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পায়। অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমনকে ভালই সামাল দিয়েছেন স্টোকস ও জ্যাকস।
আজ সকালের প্রথম সেশনটা এই দুজন ধৈর্য্যরে পরিচয় দিয়েছেন। প্রথম ঘন্টায় মাত্র ২৮ রান এবং দুই ঘন্টায় তুলেন ৫৯ রান। বিপরীতে আগেরদিন গোলাপি বলে সফল অস্ট্রেলিয়ান বোলাররা আজ চতুর্থ দিন তেমন কিছু করে দেখাতে পারেনি। স্টোকস ২২৯ বলে ৫০ এবং জ্যাকস ১৮৩ বলে ৪১ রান সংগ্রহ করেন। শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার পেসার মাইকেল নেসার এই দুজনকে সাজঘরে ফেরত পাঠান।
৬৫ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে দলীয় ৩৭ রানে ট্রাভিস হেড ও চার রান পরে মার্নাস লাবুশেনকে হারায় অস্ট্রেলিয়া। স্মিথ ও জেক ওয়েদারাল্ডেও হাত ধরে অস্ট্রেলিয়ার জয় নিশ্চিত হয়। ওয়েদারাল্ড ১৭ ও স্মিথ ২৩ রানে অপরাজিত ছিলেন।
দুই ইনিংসে ৮ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান পেসার মিচেল স্টার্ক।
আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে এডিলেডে শুরু হবে সিরিজের তৃতীয় টেস্ট।