বাসস
  ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:৫১

কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডে উজ্জ্বল রাম কৃষ্ণ ও বন্যা

ছবি : বাসস

ঢাকা, ৯ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : তীর এশিয়ান আরচ্যারী চ্যাম্পিয়নশিপস-২০২৫-এর রিকার্ভ পুরুষ ও কম্পাউন্ড নারী বিভাগের কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডে বাংলাদেশের আরচ্যারদের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন রাম কৃষ্ণ সাহা ও বন্যা আক্তার।

কম্পাউন্ড নারী বিভাগের কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডে বাংলাদেশের আরচ্যারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১২তম হয়েছেন বন্যা আক্তার, ৬৯৩ স্কোর গড়েছেন তিনি। বন্যার এটি ব্যক্তিগত সেরা স্কোর। বাংলাদেশ দল কম্পাউন্ড ইভেন্টে দলীয় রেকর্ড স্কোর গড়েছে -২০৬১। যা আগে ছিল ২০৪৫।

৭২ তীর ছোঁড়ার লড়াইয়ে শুরু থেকে নিশানা ঠিক রেখেছিলেন রাম কৃষ্ণ। ৬২ প্রতিযোগীর মধ্যে ৬৬৮ স্কোর গড়ে তিনি হয়েছেন ষষ্ঠ। রিকার্ভ পুরুষ বিভাগে বাংলাদেশের বাকি তিন আরচ্যার মোহাম্মদ রাকিব ৬৪৭ স্কোর নিয়ে ৩২তম, সাগর ইসলাম ৬৩৯ স্কোর নিয়ে ৩৮তম ও আব্দুর রহমান আলিফ ৬৩৭ স্কোর নিয়ে হয়েছেন ৪১তম।

রিকার্ভ পুরুষ এককে সাগর, আলিফ ও রাম কৃষ্ণের কাছেই প্রত্যাশা বেশি বাংলাদেশের। এলিমিনেশন রাউন্ডের প্রথম ধাপে অবশ্য এই ইভেন্টে বাংলাদেশের চার আরচ্যারই ‘বাই’ পেয়েছেন। রাম কৃষ্ণ সাহা দুটি ‘বাই’ পেয়ে এক লাফে পৌঁছে গেছেন সেরা ১৬’তে।

সেরা ২৪’র লড়াইয়ে রাকিব মুখোমুখি হবেন চাইনিজ তাইপের লিউ তাই-ইয়েনের। র‌্যাঙ্কিং রাউন্ডে ২৪তম হওয়া মালয়েশিয়ার মুহাম্মাদ হাইকাল দানিশ শিয়ামসুল আফান্ডির প্রতিপক্ষ আলিফ। সাগর লড়বেন র‌্যাঙ্কিং রাউন্ডে ২৭তম হওয়া ভিয়েতনামের লি কুয়োক ফংয়ের বিপক্ষে। 

কম্পাউন্ড নারী এককে বাংলাদেশের বাকি তিন আরচ্যার কুলসুম আক্তার ৬৮৮ স্কোর নিয়ে ১৭তম, পুষ্পিতা জামান ৬৮০ স্কোর নিয়ে ২৪তম ও মিথিলা আক্তার ৬৬২ স্কোর নিয়ে ৩২তম হয়েছেন। 

কম্পাউন্ড নারী এককে বাংলাদেশের চার আরচ্যারের মধ্যে তিন জন ‘বাই’ পেয়েছে উঠেছেন ১/১৬-এর মঞ্চে। 

এলিমিনেশন রাউন্ডের প্রথম ধাপ পেরুতে মিথিলার প্রতিপক্ষ সৌদি আরবের রাঘাদ কাবি। কুলসুম ১/১৬-তে লড়বেন ইরানের ফাতেমেহ বাঘেরির বিপক্ষে। পুষ্পিতার প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়ার পার্ক জং উন। বন্যার প্রতিপক্ষ ইরানের বিতা ওসকই আশেঘজাদেহ। 

পুরুষ দলগত রিকার্ভে ১/৪-এ উঠতে বাংলাদেশ খেলবে ভিয়েতনামের বিপক্ষে। কম্পাউন্ড নারী দলগত বিভাগে সেমি-ফাইনালে উঠতে বাংলাদেশ খেলবে কাজাখস্তানের বিপক্ষে। 

রিকার্ভ পুরুষ এককের কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডে ৬৮৭ স্কোর গড়ে সেরা হয়েছেন ভারতের সঞ্জয় ইয়াশদিপ ভোগে ও কম্পাউন্ড নারী এককের কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডে ভারতের দীপশিখা ৭০৫ স্কোর গড়ে হয়েছেন প্রথম।

ব্যক্তিগত ক্যারিয়ার সেরা স্কোর করার পর বন্যা আক্তার বলেন, “আমি আমার পারফরম্যান্সে খুশি ছিলাম। আশা করি, ভালো কিছু দিতে পারব এবং অনুশীলনে যে স্কোর ছিল, সেটা এখানে দিতে পেরেছি। বাতাস এখানে অনেক ছিল। বিশেষ করে প্রথম স্কোরিংয়ের সময় বাতাসটা বেশি ছিল। এতে একটু প্রভাব পড়েছে। তবে আস্তে আস্তে এটা কমে গেছে। যেহেতু টঙ্গী ও জাতীয় স্টেডিয়ামে মাঠ একই, আবহাওয়া একই, আমাদের কোনও সমস্যা হয়নি। যে স্কোর করেছি সেটা টিমের জন্য ভালো। সেটা টিম ইফেক্টের জন্য কাজে দেবে। বাকি দুজনকে হেল্প করতে পেরেছি স্কোর দিয়ে। 

আন্তর্জাতিকভাবে প্রথমবার ক্যারিয়ার সেরা স্কোর করেছি। এটা কালকের জন্য কাজে দেবে। আমার আত্মবিশ্বাসও বাড়াবে।”

তিনি আরো বলেন, “এর আগেও কোরিয়া ও ভারতের প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। সর্বশেষ কোরিয়াকে হারিয়েছি। তবে যাদের সঙ্গে খেলব, তাদের সঙ্গে খেলতে হবে। আমি যে স্কোর সেরা করেছি, সেটা যেন ধরে রাখতে পারি আগামীকাল। ভারতের যে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন তার সঙ্গেও খেলার অভিজ্ঞতা আছে। আমি যদি আমার সেরাটা দিতে পারি তাহলে ভালো কিছুই হবে ইনশাল্লাহ। আমাদের টিমটা শক্তিশালী। লক্ষ্যও বেশি। যেহেতু শক্তিশালী, আশা করি ভালো পজিশনে যেতে পারব আমরা।”

রিকার্ভ পুরুষ এককের কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডে ৭২ তীর ছোঁড়ার লড়াইয়ে শুরু থেকে নিশানা ঠিক রেখেছিলেন রাম কৃষ্ণ সাহা। ৬২ প্রতিযোগীর মধ্যে ৬৬৮ স্কোর গড়ে তিনি হয়েছেন ষষ্ঠ। বাংলাদেশের আরচ্যারদের মধ্যে এ ইভেন্টে সেরা অবস্থানে থাকা রাম কৃষ্ণ এখন এলিমিনেশন রাউন্ডে সেরাটা নিংড়ে দিতে উন্মুখ হয়ে আছেন।

এ প্রসঙ্গে রামকৃষ্ণ বলেন, ‘আমার  যথেষ্ট ভালো র‌্যাঙ্কিং হয়েছে। ৬ নম্বর এসেছি। এটা আমার জন্য ভালো পজিশন। অবশ্যই বাতাস ছিল। বাতাসের প্রভাব ছিল। তারপরও আমার যে বেসিক ছিল, সেটা দিয়ে আমি মেনটেন করেছি। এখন যে স্কোর হয়েছে, সেটা  ভালো। নক আউট এমন একটা রাউন্ড যেখানে যে কেউ যে  কাউকে হারিয়ে দিতে পারে। আমি নিজের সেরা পারফরম্যান্স করতে পারলে অবশ্যই ভালো হবে। একটা মেডেল আশা করতে পারি।’