শিরোনাম

খুলনা, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : খুলনার রূপসা নদীর পূর্বপাড়ে চির নিদ্রায় শায়িত শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ও বীর বিক্রম মহিবুল্লাহর ৫৩তম শাহাদাত বার্ষিকী আগামীকাল বুধবার। যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে প্রতি বছরের ন্যায় স্থানীয় রূপসা প্রেসক্লাব দুই দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
দেশ স্বাধীনের মাত্র ৬ দিন আগে ১৯৭১ সালের এই দিনে খুলনাকে শত্রু মুক্ত করার অঙ্গীকার নিয়ে রণতরি পলাশ, পদ্মা ও গানবোট পানভেল নিয়ে যাত্রাকালে খুলনা শিপইয়ার্ডের অদূরে বিমানের নিক্ষিপ্ত গোলাবর্ষণে ‘পলাশে’ থাকা স্বাধীন বাংলার এ দুই সূর্য সন্তানসহ অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পরে স্থানীয়রা তাদের মৃতদেহ রূপসা নদীর পূর্ব পাড়ে সমাহিত করেন।
এ দুই শহীদের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে রূপসা প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, দিনের প্রথম প্রহরে পূর্ব-রূপসাস্থ মাজার প্রাঙ্গণে শ্রদ্ধা নিবেদন। বিকাল ৩টায় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠান। রাত ৮ ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রূপসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রূপসা প্রেসক্লাবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক সানজিদা রিকতা, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রূপসা থানার নবগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি)আব্দুর রাজ্জাক মীর, নৈহাটি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. ইলিয়াস শেখ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন প্রেসক্লাবের সভাপতি তরিকুল ইসলাম ডালিম। পরিচালনা করবেন সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ১৯৩৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার বাঘপাঁচড়া (বর্তমান রুহুল আমিন নগর) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মোহাম্মদ আজহার পাটোয়ারী ও মায়ের নাম জোলেখা খাতুন। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। ১৯৫৩ সালে জুনিয়র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পাকিস্তান নৌবাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালের এপ্রিলে ঘাঁটি থেকে পালিয়ে যান। বাড়িতে গিয়ে ছাত্র, যুবক ও সামরিক-আধা-সামরিক বাহিনীর মানুষকে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেন। এর কিছুদিন পর ৯ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন।
অপরদিকে বীর বিক্রম মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ ১৯৪৪ সালের ৩১ আগস্ট চাঁদপুরের শাহেদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মো. সুজাত আলী ও মায়ের নাম রফিকাতুন্নেছা। তিনি ১৯৬২ সালে নৌবাহিনীতে যোগদান করেন এবং একই সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তার গ্রামের বাড়ি পুড়িয়ে দেয়।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রুহুল আমীনকে বীরশ্রেষ্ঠ ও মহিবুল্লাহকে বীর বিক্রম উপাধিতে ভূষিত করা হয়।