শিরোনাম

ঢাকা, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) সনদ গৃহীত হওয়ার ৪১তম বার্ষিকী উপলক্ষে আজ রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সার্ক কৃষি কেন্দ্র।
১৯৮৫ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রথম সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে সনদটি গৃহীত হয়। দিবসটি স্মরণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে দক্ষিণ এশিয়ার কৃষিক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (সার্ক ও বিমসটেক) মহাপরিচালক এস. এম. মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, সার্ক দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারে একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ভূমিকা রাখছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং জলবায়ুজনিত ঝুঁকি এই অঞ্চলের কৃষি ব্যবস্থার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এসব চ্যালেঞ্জ আমাদের সবার জন্য নিরাপদ, পুষ্টিকর ও সহজলভ্য খাদ্য নিশ্চিত করার প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে। কেউ যাতে পিছিয়ে না থাকে, সেজন্য ওয়ান হেলথ কাঠামোর মাধ্যমে আঞ্চলিক সমন্বয় আরো জোরদার করা প্রয়োজন।’
অনুষ্ঠানে ‘ওয়ান হেলথ ধারণার আলোকে দক্ষিণ এশিয়ায় জলবায়ু-সমন্বিত লাইভস্টক খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে আঞ্চলিক সহযোগিতা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পাকিস্তান কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের প্রাণিসম্পদ উৎপাদন বিভাগের পরিচালক ড. মুহাম্মদ ইকবাল আনজুম।
তিনি বলেন, যৌথ গবেষণা, তথ্যের সামঞ্জস্যকরণ এবং সীমান্ত-পার সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জলবায়ু-সহনশীল লাইভস্টক ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং জুনোটিক রোগঝুঁকি মোকাবিলায় ওয়ান হেলথ নীতি হতে পারে সার্কভুক্ত দেশগুলোর প্রধান অভিমুখ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন- বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. মো. আবদুছ ছালাম। তিনি বলেন, টেকসই কৃষি উন্নয়নে আঞ্চলিক সংহতি, জ্ঞান-বিনিময়, কৃষি গবেষণায় যৌথ উদ্যোগ এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের আয়োজন দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের কৃষির অগ্রযাত্রায় নতুন দিক উন্মোচন করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এর আগে সার্ক কৃষি কেন্দ্রের পরিচালক ড. মো. হারুনূর রশীদ স্বাগত বক্তব্যে কেন্দ্রের চলমান কার্যক্রম, বিভিন্ন গবেষণা উদ্যোগ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন। তিনি জানান, দক্ষিণ এশিয়ার কৃষি উদ্ভাবন, প্রযুক্তি বিনিময়, সক্ষমতা উন্নয়ন এবং প্রমাণভিত্তিক নীতি প্রণয়নে সার্ক কৃষি কেন্দ্র ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
অনুষ্ঠানে সার্কভুক্ত দেশসমূহের দূতাবাস ও হাইকমিশনের প্রতিনিধি, সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন সংস্থার প্রধান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গবেষক, উন্নয়ন সহযোগী এবং বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে সার্ক কৃষি কেন্দ্রের দু’টি নতুন প্রকাশনা- ‘দক্ষিণ এশিয়ায় পারিবারিকভাবে পরিচালিত টেকসই প্রাণিসম্পদ খামারি : ইউএনডিএফএফ ও এসডিজি অর্জনে ভূমিকা’ এবং ‘সার্কভুক্ত দেশসমূহে তেলবীজ ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি’ -উন্মোচন করা হয়।