শিরোনাম

ফরিদপুর, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : প্রকৃত তথ্যকে আড়াল করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে শনাক্ত করেছে ফরিদপুর জেলা পুলিশ। ফরিদপুর জেলা পুলিশের বরাত দিয়ে পুলিশ সদরদপ্তর আজ এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ফেসবুক পেজে ‘ফরিদপুরের সদরপুরে মন্দিরের জমি নিয়ে সংঘর্ষ : পালিয়ে যাচ্ছে হিন্দু পরিবার, টহলে পুলিশ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেখানে দাবি করা হয় রাধা গোবিন্দ মন্দিরের জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে এবং অন্তত পাঁচ শতাধিক হিন্দু পরিবার গ্রাম ছেড়ে যাচ্ছে। জেলা পুলিশের তদন্তে এসব দাবি ভিত্তিহীন, অতিরঞ্জিত এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপতৎপরতা হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, হরিনা মৌজার ৫৮৪ নং খতিয়ানভুক্ত ৪১২/৪১৩ দাগে ৪৬ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন মহাদেব ঘোষ। প্রায় ৬-৭ মাস আগে তিনি জমিটি স্থানীয় বাবুল বেপারী ও সনাতন ধর্মাবলম্বী সুশান্ত মালোর কাছে দলিলের মাধ্যমে বিক্রি করেন।
জমি বিক্রির বিষয়টি জানার পর মহাদেব ঘোষের প্রতিপক্ষ মানিক ঘোষ দাবি করেন জমিটি সার্বজনীন মন্দিরের সম্পত্তি। এ নিয়ে বিক্রেতা-ক্রেতা ও প্রতিপক্ষ দাবিদারদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। গত ১৬ নভেম্বর ভোরে জমি দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও মারামারির ঘটনা ঘটে, যাতে কয়েকজন আহত হন। খবর পেয়ে সদরপুর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনায় সুশান্ত মালোকে আটক এবং পরে বাবুল বেপারীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
জেলা পুলিশ জানিয়েছে, ‘হামলার ভয়ে পাঁচ শতাধিক হিন্দু পরিবার গ্রাম ছাড়ছে’ বা ‘এলাকায় চরম নিরাপত্তাহীনতা’ ধরনের প্রচারণা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও গুজব। সরেজমিনে তদন্তে কোনো পরিবার এলাকা ত্যাগ করেছে এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। পুরো এলাকা পুলিশের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছে।
জেলা পুলিশ আরও জানিয়েছে, এ বিরোধ সম্পূর্ণই জমির মালিকানা নিয়ে, এটি কোনো সাম্প্রদায়িক সংঘাত নয়। উভয় পক্ষেই সনাতন ধর্মাবলম্বী ও মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন জড়িত আছেন। একটি স্বার্থান্বেষী মহল সাধারণ জমি বিরোধকে ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’ হিসেবে প্রচার করে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চাইছে। উসকানিমূলক ও বিভ্রান্তিকর পোস্ট থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে জেলা পুলিশ জানিয়েছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টে যেকোনো অপতৎপরতার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ঘটনায় আতঙ্কিত না হয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য এলাকাবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।