শিরোনাম

চট্টগ্রাম, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : জাল দলিল তৈরি, ভুয়া মালিক উপস্থাপন এবং পরস্পর যোগসাজশে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ আত্মসাৎ করার অভিযোগে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা ও চট্টগ্রামের এনজিও ‘নওজোয়ান’ এর প্রধান নির্বাহীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ রোববার দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপসহকারী পরিচালক মুহাম্মদ হামেদ রেজা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- ‘নওজোয়ান’ এনজিও’র প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ ইমাম হোসেন চৌধুরী, ডাচ-বাংলা ব্যাংক মুরাদপুর শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক কে এম এজাজ, এবং একই শাখার সাবেক ঋণ কর্মকর্তা ও বর্তমান এসইও (কর্পোরেট ক্রেডিট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিভিশন) কৌশিক রায় চৌধুরী।
দুদক জানায়, ‘নওজোয়ান’ এনজিও কৃষি ও সোলার খাতে ৫ কোটি টাকার ঋণের জন্য ২০১৫ সালে আবেদন করে। সেই আবেদনে সংগঠনের সদস্য মো. ফরিদুল হাসানের নামে ৩০ শতক জমি বন্ধক রাখার কথা বলা হয়। তদন্তে বেরিয়ে আসে- ব্যাংক ও রেজিস্ট্রি অফিসে যে ব্যক্তিকে ফরিদুল হাসান হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছিল, তিনি প্রকৃত জমির মালিক নন। ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে দলিল ও আমমোক্তারনামা সম্পাদিত হয়।
জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করে দেখা যায়, দলিলে ব্যবহার করা এনআইডির তথ্য আসলে অন্য ব্যক্তির। অর্থাৎ জাল পরিচয়ে বন্ধকী দলিল তৈরি করে ঋণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। দুদক বলছে, এই প্রতারণার পুরো কার্যক্রমে এনজিও নওজোয়ান এর প্রধান নির্বাহী ইমাম হোসেন চৌধুরী সরাসরি ভুয়া মালিক ফরিদুলকে ব্যাংক ও রেজিস্ট্রি অফিসে হাজির করে সহযোগিতা করেন।
এদিকে ব্যাংকের সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক এজাজ ও ঋণ কর্মকর্তা কৌশিক রায় জমির মালিকানা যাচাই, পরিচয় নিশ্চিতকরণ এবং মাঠ পর্যায়ে তদন্ত ছাড়াই ঋণের সুপারিশ করেন। পরে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় আড়াই কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে ‘নওজোয়ান’ এনজিওর নামে মঞ্জুরিপত্র জারি করে।
দুদক বলছে, আসামিদের এই কর্মকাণ্ড আমানত ব্যবস্থাপনায় গুরুতর বিশ্বাসভঙ্গ, জালিয়াতি, প্রতারণা এবং দুর্নীতির স্পষ্ট দৃষ্টান্ত। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারায় এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে মামলার অনুমোদনও প্রদান করা হয়েছে। তদন্তে নতুন তথ্য বা অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।