বাসস
  ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৮:৪৪

১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামকে গবেষণার মাধ্যমে নথিভুক্ত করা হবে: মির্জা ফখরুল 

ছবি : বাসস

ঢাকা, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামকে গবেষণার মাধ্যমে নথিভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। 

আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন, গুম-খুন ও মিথ্যা মামলার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, এগুলো ইতিহাসে আনতে হবে, নথিভুক্ত করতে হবে। 

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে আয়োজিত ‘চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে বিএনপি’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি একটি লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি। পৃথিবীর কোনো লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এই রকম অত্যাচার, নির্যাতন-নিপীড়ন ও হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে গেছে কি না, আমি জানি না। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। ২০ হাজারের মতো নেতা-কর্মী শহীদ হয়েছেন।

তিনি বলেন, বিএনপি বিপ্লবী দল নয়, বরং লিবারেল ডেমোক্র্যাট হিসেবে সব ধর্ম, বর্ণ ও মতের মানুষকে নিয়ে ‘রেইনবো স্টেট’ গঠনের লক্ষ্যে এগোচ্ছে। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ডেমোক্রেসির মূল কথা হচ্ছে, আমি তোমার সঙ্গে একমত  না হতে পারি, কিন্তু তোমার মত প্রকাশের যে স্বাধীনতা তা আমি আমার জীবন দিয়ে হলেও রক্ষা করব। দ্যাট ইজ ডেমোক্রেসি। দুর্ভাগ্যক্রমে আমরা এখানে অন্যের মতকে সহ্য করতে পারি না, আমরা তাকে উড়িয়ে দিতে চাই, এই জায়গা থেকে আমাদের সরে আসতে হবে। 


তিনি বলেন, বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থেই যদি আমরা টেকসই একটা ব্যবস্থা গড়তে চাই, ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতে না চাই, তাহলে গণতন্ত্রকে আমাদের এখানে প্রতিপালন করতে হবে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, কোন দল জিতল, কে হারল, এটা জরুরি নয়। জরুরি হচ্ছে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানটা শক্তিশালী হলো কিনা, আমাদের জুডিশিয়ারি ইন্ডিপেন্ডেন্ট কিনা, আমাদের মিডিয়া ইন্ডিপেন্ডেন্ট কিনা, আমাদের পার্লামেন্ট ইফেক্টিভ কিনা, আমাদের দেশে আইনের শাসনে চলছে কিনা, সুশাসন চলছে কিনা, মানুষের সামাজিক মর্যাদা সুরক্ষা এবং মানবাধিকার আমরা রক্ষা করতে পারছি কিনা, এই বিষয়গুলোকে নিয়েই ভবিষ্যতে আমাদের কাজ করতে হবে।

গণতান্ত্রিক মোর্চা গঠন করতে হবে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, নির্বাচন আসছে। বিএনপির উপরে দায়িত্ব বেশি। বিএনপিকে সত্যিকার অর্থেই এমন একটা মোর্চা গড়ে তুলতে হবে, যারা গণতন্ত্রের জন্য অতীতে লড়াই করেছে, লড়াই করবে এবং গণতন্ত্রকে এখানে প্রতিষ্ঠানিক রূপ দেবে। এই মোর্চাই আমাদেরকে এখানে গড়তে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ন্যাশনাল পিপপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, ‘চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে বিএনপি’ বইয়ের সম্পাদক বাবুল তালুকদার ও প্রকাশক অধ্যাপক বিএম নাগিব হোসেন বক্তব্য রাখেন।