বাসস
  ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:৪৬

সাইবার হুমকি মোকাবিলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

প্রতীকী ছবি

ঢাকা, ১২ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ক্রমবর্ধমান সাইবার হুমকি মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আজ এশিয়া সেন্টার, গুগল এবং লিগ্যালাইজড এডুকেশন বাংলাদেশ যৌথভাবে ডিজিটাল সিকিউরিটি ট্রেনিং ফর ট্রেইনারস (টিওটি) কর্মশালা আয়োজন করে।

দুই ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মশালাটি আন্তর্জাতিক ব্যবসা ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি)-তে অনুষ্ঠিত হয়। এটি ডিজিটাল সিকিউরিটি ট্রেনিং (ডিএসটি) কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয়, যার উদ্দেশ্য দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় প্রশিক্ষকদের মাধ্যমে ডিজিটাল সিকিউরিটি ট্রেনিং কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ডিজিটাল সিকিউরিটি ট্রেনিং (ডিএসটি) কর্মসূচিটি একটি ব্যাপক উদ্যোগ, যা বাংলাদেশসহ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের উচ্চঝুঁকিপূর্ণ ও ডিজিটালি ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীগুলোর ডিজিটাল সাক্ষরতা ও সাইবার নিরাপত্তা সক্ষমতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে। 

প্রশিক্ষণটিতে অংশগ্রহণকারীদের বাস্তব দক্ষতা ও সচেতনতা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়, যাতে তারা অনলাইনে প্রতারণা, র‌্যানসমওয়্যার, এবং সাইবার বিভ্রান্তির মতো ঝুঁকি থেকে মানুষকে সুরক্ষা দিতে পারেন।

এই টিওটি সেশনের শেষে অংশগ্রহণকারীদের মাস্টার ট্রেইনার সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে। এই সার্টিফায়েড ট্রেইনাররা নিজেদের সেশন পরিচালনা করতে পারবেন এবং অন্যদের ডিজিটালভাবে সচেতন ও সক্ষম করতে সাহায্য করবেন।

প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন বিভিন্ন স্থানীয় প্রশিক্ষক, উচ্চঝুঁকিপূর্ণ ব্যবহারকারী যেমন-একাডেমিক, মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, মাইক্রো-ইনফ্লুয়েন্সার এবং সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন (সিএসও)-এর সদস্যরা। এছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এসএমই) এবং ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরাও অংশ নেন, যাদের সাইবার হামলার ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি।

ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছেন বয়স্ক ব্যক্তি, নারী, নিম্নআয়ের মানুষ, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, যুব নেটওয়ার্ক এবং উচ্চঝুঁকিপূর্ণ ব্যবহারকারীদের পরিবার ও বন্ধুবান্ধব-যাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।

কর্মশালায় চারটি মূল বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল - ডিজিটাল নিরাপত্তা হুমকি সম্পর্কে ধারণা, ব্যবহারিক ডিজিটাল নিরাপত্তা সরঞ্জাম, কার্যকর প্রশিক্ষণ কৌশল এবং সাইবার হাইজিন বা নিরাপদ অনলাইন অভ্যাস।

এই উদ্যোগটি এশিয়া সেন্টার, গুগল এবং লিগালাইজড এডুকেশন বাংলাদেশের যৌথ প্রচেষ্টায় পরিচালিত হচ্ছে। স্থানীয় সহযোগী হিসেবে লিগালাইজড এডুকেশন বাংলাদেশ সম্প্রদায় ভিত্তিক সংগঠন ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, যাতে এই প্রশিক্ষণ দেশের সর্বত্র পৌঁছে যায়।

শিক্ষা ও সামাজিক ন্যায়বিচার খাতে তাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা তাদেরকে বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর ডিজিটাল প্রয়োজন মেটাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারে পরিণত করেছে। এশিয়া সেন্টার একটি অলাভজনক সিভিল সোসাইটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, যা এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ডিজিটাল অধিকার, সাইবার নিরাপত্তা ও সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করছে।

ব্যাপক এই ডিএসটি কর্মসূচি পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১২টি দেশে পরিচালিত হচ্ছে। স্থানীয় মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করার মাধ্যমে এটি দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে যাতে সম্প্রদায়ের মধ্যে সাইবার হাইজিন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পায় এবং সংশ্লিষ্ট লোকজন নিজেরাই ডিজিটাল হুমকি মোকাবিলায় সক্ষম হয়।

প্রাথমিক প্রশিক্ষণ শেষে এশিয়া সেন্টার ও গুগল প্রশিক্ষকদের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ, সরঞ্জাম ও সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে, যাতে তারা ভবিষ্যতেও এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন।

প্রশিক্ষণ সফলভাবে সম্পন্নকারীরা মাস্টার ট্রেইনার সার্টিফিকেট পাবেন, যা তাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ পরিচালনার অনুমোদন দেবে। এসব প্রশিক্ষক সারাদেশে ডিজিটাল সচেতনতা ও নিরাপত্তা জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।