বাসস
  ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:৫৫

ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানি শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে কাজ করছে ইউজিসি

ছবি : বাসস

ঢাকা, ৬ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি ও জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)- এর সদস্য প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।

ইউজিসি ও ইউএন উইমেন যৌথভাবে ‘ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানি ও জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা অবসানে চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণ’ শীর্ষক এই কর্মশালার আয়োজন করে।

ইউজিসি’র আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) জেসমিন পারভিন- এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আইয়ুব ইসলাম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর মাছুমা হাবিব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠনে নারীদের প্রাধান্য দিতে হবে। নিরাপদ ক্যাম্পাস গঠন করা, সংশ্লিষ্ট কমিটির কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার ওপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানি ও জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা অবসান ও উত্তরণে ‘হোল অব স্কুল অ্যাপ্রোচ’ একটি আদর্শ মডেল হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ইউজিসি সদস্য প্রফেসর আইয়ুব ইসলাম বলেন, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক নীতিমালা প্রণয়ন এবং আচরণ ও মনোভাব পরিবর্তন জরুরি। ইউজিসি এ লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে।

ইউজিসি’র পরিচালক জেসমিন পারভিন বলেন, দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে যৌন হয়রানি ও জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা অবসানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে এবং ইউএন উইমেন-এর কারিগরি সহায়তায় তিন বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। প্রকল্পের আওতায় নারীদের জন্য নিরাপদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্র, নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি, মূল্যবোধ ও আচরণ পরিবর্তন এবং প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

কর্মশালায় দেশের ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির প্রধান, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিনিধি এবং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। উন্মুক্ত আলোচনায় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি ও জেন্ডার সহিংসতা অবসানে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি প্রণয়ন, সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদনের মাধ্যমে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেল গঠন করা, সেলের জন্য দপ্তর, প্রয়োজনীয় জনবল ও বাজেট বরাদ্দ দেওয়া, ওয়েবসাইটে সেল ও এর কার্যক্রম দৃশ্যমান করা, কার্যক্রমে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ না করা, জেন্ডার সমতা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ আয়োজন করা, জেন্ডার সংবেদনশীল ক্যাম্পাস তৈরি করা, মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা কমিটি গঠন করা, অভিযোগ দায়েরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা গ্রহণ করা এবং পরিবার ও কমিউনিটিকে এসব সংকট থেকে উত্তরণে যুক্ত করার পরামর্শ দেন।

অনুষ্ঠানে ইউএন উইমেন-এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর শ্রবণা দত্ত এবং প্রোগ্রাম অ্যানালিস্ট তোসিবা কাশেম ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানি ও জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা অবসান ও উত্তরণে ‘হোল অব স্কুল অ্যাপ্রোচ’ নিয়ে সেশন পরিচালনা করেন।