শিরোনাম

রাজশাহী, ৪ নভেম্বর, ২০২৫(বাসস): শিশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতা, দমন-পীড়ন এবং বিশেষ করে যৌন নির্যাতন থেকে সুরক্ষায় সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত প্রচেষ্টা সর্বোত্তম উপায় হতে পারে।
আজ রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে শিশু যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে আয়োজিত এক কমিউনিটি সংলাপে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
সংলাপে বক্তারা বলেন, শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশকে শক্তিশালী করতে শেখার ও বেড়ে ওঠার পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া উচিত, যা একটি সুস্থ ও সমৃদ্ধ জাতি গঠনের জন্য অত্যাবশ্যক। শিশুরা ভবিষ্যতের নেতা। তাই তাদের ওপর সহিংসতা, দমন-পীড়ন এবং যৌন নির্যাতন থেকে সুরক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ এসব তাদের সামগ্রিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে।
বক্তারা শিশু ও নীতি-নির্ধারকদের মধ্যে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিএডি) এ সংলাপের আয়োজন করে। ইসিপিএটি ইন্টারন্যাশনালের সহায়তায় ‘শিশুরাই ভালো জানে: শিশুদের অংশগ্রহণকে শিশু যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে কার্যকারিতা বৃদ্ধির মূল চাবিকাঠি হিসেবে গড়ে তোলা’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ সংলাপের আয়োজন করা হয়।
এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো- শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা, সুরক্ষা নীতিমালা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং শিশুদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, যাতে তারা সহিংসতা, নির্যাতন, শোষণ ও অবহেলা থেকে নিরাপদ থাকে।
রাজশাহী বিভাগের কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার এবং সভাপতিত্ব করেন এসিএডি সভাপতি অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় পরিচালক আবদুর রাজ্জাক, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রকিবুল হাসান ইবনে রহমান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল ওহাব এবং জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মনজুরুল কাদের।
সরকারি কর্মকর্তা, উন্নয়নকর্মী, সাংবাদিক, শিক্ষক, স্থানীয় নেতা, অভিভাবক, ধর্মীয় নেতা ও অন্যান্য পেশাজীবীসহ প্রায় ৪৫ জন সংলাপে অংশ নেন। কীভাবে শিশুদের মতামত সিদ্ধান্ত গ্রহণে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, শিশু-কেন্দ্রিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায় এবং শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা যায়, এ বিষয়ে তারা আলোচনা করেন।
এসিএডি প্রকল্প সমন্বয়কারী সুব্রত কুমার পাল, আলী আহমেদ এবং মনিরুল ইসলাম অধিবেশনগুলো পরিচালনা করেন।
সংলাপে বলা হয়, শিশুরা শুধু যৌন নির্যাতনের শিকার নয়, বরং সমাধান খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ, অভিজ্ঞতা ও সূক্ষ্মদৃষ্টি শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (আরসিসি), গোদাগাড়ী ও মোহনপুর উপজেলার ১০জন শিশু নেতা এবং পাঁচজন পিয়ার এডুকেটর সংলাপে অংশ নিয়ে তাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন। এর মূল লক্ষ্য হলো- শিশুদের নেতৃত্বের দক্ষতা গড়ে তোলা এবং অংশগ্রহণমূলক গবেষণা ও তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে তাদের ক্ষমতায়ন করা।