শিরোনাম

ঢাকা, ২ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নভেম্বরের মধ্যেই জুলাই সনদের আদেশের উপর গণভোট দিতে হবে। দেশবাসী সকলেই গণভোটের ব্যাপারে একমত। তবে যারা সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট চায় যা সম্পূর্ণ অবাস্তব।
তিনি বলেন, একটি মহল বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে দেশে উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। আমরা এ পরিস্থিতির অবসান চাই। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হোক তা আমরা অবশ্যই চাই। কিন্তু তার আগে অবশ্যই গণভোটের আয়োজন করতে হবে। আজ রোববার সন্ধায় রাজধানীর মগবাজারস্থ আল-ফালাহ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের আরও বলেন, ড. ইউনূস সরকার জনগণের সমর্থন নিয়েই ক্ষমতায় বসেছে। তার সততা, যোগ্যতা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও যোগ্যতা নিয়ে কারও কোন প্রশ্ন নেই। কিন্তু বিএনপি বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। সরকারকে অবশ্যই নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোনো মহলের ফাঁদে পা না দেয়ার জন্য তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সকলে মিলে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে আলোচনার টেবিলে বসে সকল সমস্যার একটি সুষ্ঠু রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করার জন্য তিনি বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। দেশের জনগণ সকল সংকটের সমাধান চায়। জাতীয় ঐক্যই বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ। কোন কোন মহল বলেন যে, গণভোটে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। জাতীয় সংকট থেকে উত্তরণের জন্য গণভোটে যে টাকা খরচ হবে জাতীয় প্রয়োজনে এটা কিছুই নয়। ফ্যাসিবাদীরা দেশের যে টাকা বিদেশে পাচার করেছে তা দিয়ে এক হাজারটি গণভোট করা সম্ভব।
ডা. তাহের বলেন, বিগত ৫৪ বছরে বার বার ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু জনগণের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি। যারাই ক্ষমতায় গিয়েছে তারাই ধোঁকা, দলীয়করণ, আত্মীয়করণ ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে লুটপাট করেছে। জনগণ ও জুলাই যোদ্ধারা এ অবস্থার অবসান চায়।
তিনি বলেন, বিএনপি প্রথম থেকেই সংস্কারের ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করে আসছে। তারা নিজেদের সংস্কারের পিতা দাবি করছিলো। কিন্তু বাস্তবে সব সময়ই সংস্কারের বিরোধিতা করছে। দুনিয়ার কোন দেশেই নোট অব ডিসেন্টের উপর গণভোট হয়নি।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী কখনো মিথ্যা বক্তব্য দেয় না। বিএনপির মহাসচিব জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছে। এখন মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে গিয়ে নিজেরাই বিপদে পড়েছে। অথচ অভিযোগ করছে যে, জামায়াত তাদের বিপদে ফেলেছে। বরঞ্চ তারা নিজেরাই মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে বিপদে পড়েছে। বিএনপির এক নেতা বলেছেন, তারা সংস্কার চায় না, জুলাই সনদ এবং গণভোট চায় না। আমাদের বক্তব্য হল, জামায়াত কখন কোথায় বলেছে যে, তারা সংস্কার চায় না, জুলাই সনদ ও গণভোট চায় না। বিএনপির এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ থাকলে তা জাতির সামনে পেশ করা উচিত। মূলত তারাই এ ধরনের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে নিজেরাই বিপদে পড়েছে।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এড. মতিউর রহমান আকন্দের সঞ্চালনায় এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. শাহাবুদ্দিন, মোবারক হোসাইন ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল।