বাসস
  ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:৪২

ডিএনসিসিতে প্রায় ১৩ লাখ শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে

ঢাকা, ৮ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস): ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় প্রায় ১৩ শিশুকে টাইফয়েডের টিকা দেওয়া হবে। জন্মনিবন্ধন না থাকলেও শিশুরা এ টিকা নিতে পারবে।

আজ বুধবার রাজধানীর গুলশান-২ এ ডিএনসিসির নগর ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী এ তথ্য জানান।

ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, টাইফয়েডের টিকা নিতে জন্মনিবন্ধন কোনো বাধা তৈরি করবে না। যাদের জন্মনিবন্ধন আছে এবং যাদের নেই উভয়েই যেন সঠিকভাবে টিকা নিতে পারে, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি জানান, ডিএনসিসির ১০টি অঞ্চলে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত মাসব্যাপী মোট ১৮ কর্মদিবসে ২ হাজার ১৮১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৭ লাখ ৬০ হাজার ৭৯০ জন শিক্ষার্থী এবং কমিউনিটির প্রায় ৫ লাখ ৩৩ হাজার ২৭৯ জন শিশুসহ মোট ১২ লাখ ৯৪ হাজার ৬৯ জন শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে।

তিনি আরও জানান, আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোট ১০ দিন টিকা প্রদান করা হবে। এছাড়া ১৩ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী ইপিআই টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে মোট ১৮ দিন টিকা প্রদান করা হবে এবং ১ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত স্যাটেলাইট বা আউটরিচ ইপিআই কেন্দ্রগুলোতেও টিকাদান কার্যক্রম চলবে।

ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, প্রতিটি টিমে ২ জন টিকাদান কর্মী ও ৩ জন স্বেচ্ছাসেবক (ভলান্টিয়ার) দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ক্যাম্পেইনের সেশন চলবে।

ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে অনুষ্ঠিত হবে। এতে ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

সংবাদ সম্মেলনে ডিএনসিসির স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহমুদা আলী জানান, ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশু-কিশোরদের জন্য এই টিকা বিনামূল্যে প্রদান করা হবে। টিকাগ্রহণের জন্য সরকারের ভ্যাকসিন নিবন্ধন পোর্টালে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। সাধারণত নিবন্ধনের সময় শিশুদের জন্মনিবন্ধন নম্বর প্রদান বাধ্যতামূলক। অন্যথায় নিবন্ধন সম্পন্ন হবে না এবং ভ্যাকসিন কার্ডও পাওয়া যাবে না।

তবে অনেক শিশুর জন্মনিবন্ধন এখনো না হওয়ায় তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান ডিএনসিসির এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, নানা কারণে নগরের অনেক শিশুর জন্মনিবন্ধন করা হয়নি। আবার অনেক এলাকায় প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা বা ভুল তথ্যের কারণে নিবন্ধন সম্পন্ন হচ্ছে না। তাই এসব শিশুদের যেন টিকা থেকে বঞ্চিত হতে না হয়, সেজন্য আমরা বিকল্প ব্যবস্থা নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, যেসব শিশুর জন্মনিবন্ধন নেই, অভিভাবকরা তাদের নিয়ে সরাসরি নির্ধারিত টিকাকেন্দ্রে যেতে হবে। সেখানে উপস্থিত ডিএনসিসির স্বাস্থ্যকর্মীরা অভিভাবকের মৌলিক তথ্য সংগ্রহ করে হাতে হাতে টিকা কার্ড ইস্যু করবেন। এরপর শিশুরা তাৎক্ষণিকভাবে টিকা নিতে পারবে।

টাইফয়েডের টিকা প্রদান কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১ আগস্ট থেকে অনলাইনে (vaxepi.gov.bd/registration/tcv) নিবন্ধন শুরু হয়েছে। নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজন হবে ১৭ সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন সনদ।

অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডা. মাহমুদা আলী বলেন, টাইফয়েড একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ। সময়মতো টিকা নিলে শিশুদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যায়। তাই অভিভাবকদের অনুরোধ করছি, সন্তানদের নির্ধারিত সময়ে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।

ডিএনসিসি জানিয়েছে, টিকাদান কার্যক্রমটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং ইউনিসেফ-এর সহযোগিতায় পরিচালিত হবে। এই কর্মসূচির আওতায় ডিএনসিসির বিভিন্ন ওয়ার্ডে অস্থায়ী টিকাকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী, সহায়ক ও তথ্য সংগ্রাহক থাকবেন।