বাসস
  ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:৩৪
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:২৫

প্রশাসনে স্বৈরাচারের দোসদের রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না : মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ

বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন। ছবি : বাসস

ঢাকা, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘প্রশাসনে এখনো স্বৈরাচারের দোসররা বসে আছে। এদের রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না।’

তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ যে এখনো নির্বাচনী ম্যাপের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারছে না তার একটি কারণ বর্তমান প্রশাসনে এখানে স্বৈরাচারের দোসরা এখনো বসে আছে। এদেরকে সরানোর জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় নাই এবং এরা থাকলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।’

‘আমরা বিএনপি’র পক্ষ থেকে দাবি জানিয়েছি, আজকে আবারো জানিয়ে জানাবো নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থেই বর্তমান প্রশাসন ব্যবস্থাকেও নিরপেক্ষ করতে হবে। আমরা স্বৈরাচারের দোসরদেরকে মাঠে রেখে নির্বাচনে যেতে পারি না।’

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মের উদ্যোগে ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিকল্প নাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন।

‘নির্বাচন বানচালকারীদের বিএনপি রাজপথেই প্রতিরোধ করবে’ বলে হুশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা বলছে যে, নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। আমরা তাদেরকে বলতে চাই, বিএনপি কোনো দূর্বল দল নয়। কারা নির্বাচন হতে দেবে না ইনশাল্লাহ আমরা রাজপথে দেখতে চাই। ১৭ বছরের আত্মত্যাগ তো ব্যর্থ হতে পারে না।’

‘আজকে আমরা বাংলাদেশের সবাইকে সরকার, অন্যান্য রাজনৈতিক দল, যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে আওয়ামী লীগকে সবাইকে মেসেজ দিতে চাই, জিয়াউর রহমান আজ নেই কিন্তু তার দল বিএনপি এখনো বেঁচে আছে। ইনশাল্লাহ ফেব্রুয়ারি মাসেই নির্বাচন হবে।’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হতে পারে না, এদেশের জনগণের এটা সম্পর্কে কোনো ধারণাই নাই। যারা পিআর নিয়ে আন্দোলন করছেন তাদেরকে বলব, আপনারা জনগণের কাছে যান। আপনাদের ম্যানিফেস্টোতে বলেন, ইশতেহারে বলেন, যে আমরা সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন চাই এই দেশে জনগণ যদি আপনাদেরকে সংখ্যাগিষ্ঠতা দেয় তাহলে আপনারা এই ব্যবস্থা চালু করেন। আমরা মাথা পেতে নেব।’

‘কিন্তু এইভাবে জনগণের উপরে দুই-তিনটি রাজনৈতিক দল, ইউরোপ আমেরিকা থেকে আগত বুদ্ধিজীবীদের দ্বারা পরিচালিত হয়ে এই ধরনের সিস্টেম করতে যাওয়া বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হবে। আমরা দেশের সর্ববৃহৎ দল রাজনৈতিক দল বিএনপি আমরা কখনোই এটিকে সহ্য করব না। এইভাবে জনগণের ওপর অত্যাচার করে নিজেদের স্বার্থে, নিজস্ব দলীয় স্বার্থে অদ্ভুত নির্বাচনী ব্যবস্থা যার সাথে আমাদের দেশের জনগণ পরিচিত নয় এই ব্যবস্থা আমরা চালু হতে দিতে পারি না।’

এনসিপি‘র আওয়ামী লীগের রোগে ধরেছে উল্লেখ করে হাফিজ বলেন, ‘এনসিপি তাদেরও আওয়ামী লীগের ওই রোগে ধরেছে। আওয়ামী লীগ যেমন ক্লেইম করে বাংলাদেশ তারাই স্বাধীন করেছে। এনসিপি এই সদ্য সাবালক ছাত্ররা তারাও বলতে চায় যে, শেখ হাসিনা সরকারের নাকি তারাই পতন ঘটিয়েছে।’

‘বিএনপির ৫৮৮ জন সদস্য ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের দেড় মাসের সংগ্রামে জীবন দিয়েছে। এখন তারা মনে করে যে তারাই (এনসিপি) হল এই রাষ্ট্রের কর্ণধার, তাদের এই দায়িত্ব এই দেশকে ঠিক করার। কিছুদিন আগে ডাকসু নির্বাচন হল, এই এনসিপি’র তো সবাই ছাত্র, তারা ছাত্রদের প্রতিনিধি বলে দাবি করত তারা এক’শ ভোট পায় নাই ডাকসু নির্বাচনে। তারা এখন বলতে চায়, পিআর না হলে নির্বাচনই হতে দেবো না।’

পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পাবর্ত্য চট্টগ্রামে আবার শুরু হয়েছে পুরানো খেলা। সেখানে ভারতীয় পতাকা উঠতো বহু বছর আগে থেকেই। কেবলমাত্র শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, তিনি সেখানে বাঙালিদেরকে পাহাড়ি এলাকায় পুনর্বাসিত করার পরে সেখানে জনসংখ্যার মধ্যে একটা ব্যালেন্স এসেছে। যার জন্য এখন আর তারা ভারতের পক্ষে স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারছে না।’

‘এইজন্য শহীদ জিয়াউর রহমান ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন, তিনি বাংলাদেশের অখন্ডতাকে রক্ষা করেছেন, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পতাকাকে সবসময় উড্ডীন রেখেছেন।’

জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় নেত্বৃৃন্দ বক্তব্য রাখেন।