শিরোনাম
ঢাকা, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ব্যালট পেপার নীলক্ষেতে ছাপানোর তথ্য সংশ্লিষ্ট ভেন্ডর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানায়নি বলে দাবি করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান।
তিনি বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে মূল প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগী একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এতে আইনের কোনো ব্যত্যয় হয়নি।
আজ রোববার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে ‘ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন পরবর্তী বিভিন্ন ইস্যু’ নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ঢাবি উপাচার্য বলেন, প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে একটি অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে ব্যালট পেপার ছাপানোর দায়িত্ব প্রদান করা হয়। রেকর্ড সংখ্যক ভোটার ও প্রার্থীর বিবেচনায় দ্রুততম সময়ে নির্ধারিত পরিমাণ ব্যালট ছাপানোর স্বার্থে মূল ভেন্ডরের সাথে আলোচনা করে সমযোগ্য একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে একই টেন্ডারের অধীনে কাজে সম্পৃক্ত করার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে উক্ত সহযোগী ভেন্ডর নীলক্ষেতে ব্যালট ছাপানোর তথ্যটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেনি। এ ব্যাপারে আমরা তাদের থেকে ব্যাখ্যা নিয়েছি।
তিনি বলেন, নীলক্ষেতে কাটিং শেষে প্রি-স্ক্যান ও পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য তারা তাদের মূল অফিসে এনে প্রি-স্ক্যান সম্পন্ন করে নির্দিষ্ট পরিমাণে প্যাকেটে ভরে সিলগালা করে বিশ্ববিদ্যালয়কে সরবরাহ করে। তারা ব্যালট প্রস্তুতকরণ প্রক্রিয়ায় ও আনা নেওয়ায় চুক্তি মোতাবেক সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। ব্যস্ততার কারণে কর্তৃপক্ষকে তারা নীলক্ষেতে ব্যালট প্রিন্টিং ও কাটিংয়ের বিষয়টি জানাতে ভুলে যায় বলে স্বীকার করে।
উপাচার্য বলেন, ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, সহযোগী প্রতিষ্ঠানটি নীলক্ষেতে ২২ রিম কাগজ দিয়ে ৮৮ হাজার ব্যালট ছাপায়। যা থেকে প্রিন্টিং, কাটিং, প্রি-স্ক্যান পর্ব শেষে নির্দিষ্ট পরিমাণে ব্যালট প্যাকেটে সিলগালা করে ৮৬ হাজার ২৪৩টি ব্যালট সরবরাহযোগ্য করা হয় এবং অতিরিক্ত ব্যালটগুলো প্রচলিত পদ্ধতিতে নষ্ট করে ফেলা হয়।
তিনি বলেন, ব্যালট পেপার ছাপানোর স্থান বা সংখ্যা সুষ্ঠু নির্বাচনকে কোনো ভাবে প্রভাবিত করে না। কারণ, ব্যালট পেপার ভোটের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত করতে কয়েকটি ধাপ সম্পন্ন করতে হয়। ব্যালট পেপারটি ছাপানোর পর তা নির্দিষ্ট পরিমাপে কাটিং করতে হয়। তারপর সুরক্ষা কোড আরোপ করে ওএমআর মেশিনে প্রি-স্ক্যান করে তা মেশিনে পাঠযোগ্য হিসেবে প্রস্তুত করতে হয়। এরপর চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তার সীলসহ স্বাক্ষর ও কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার স্বাক্ষরযুক্ত হলেই তা ভোট গ্রহণের জন্য উপযুক্ত হয়। এ সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই পূর্ণ সর্তকতার সঙ্গে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই প্রক্রিয়ায় চূড়ান্তভাবে ২ লাখ ৩৯ হাজার ২৪৪টি ব্যালট ভোট গ্রহণের জন্য প্রস্তুত করা হয়। মোট ভোটার ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন এবং ভোটার প্রতি ৬টি ব্যালট ছিল। মোট ভোট দিয়েছেন ২৯ হাজার ৮২১ জন ভোটার। মোট ব্যালট ব্যবহার করা হয়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৯২৬টি। অবশিষ্ট ব্যালট ৬০ হাজার ৩১৮টি।
প্রার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, কোনো প্রার্থী যদি সুনির্দিষ্ট কোনো সময়ের বা কোনো একটি প্রাসঙ্গিক ঘটনা পর্যালোচনা করার জন্য সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে চান, তারা যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মনোনীত বিশেষজ্ঞ বা মনোনীত ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নির্ধারিত কোনো স্থানে তা দেখতে বা পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।
ভোটারদের স্বাক্ষরযুক্ত ভোটার তালিকা দেখানোর বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞ আইনজীবীদের সঙ্গে অধিকতর আলোচনা করেছি। এ বিষয়ে তারা বলছে কোনো প্রার্থী যদি নির্দিষ্ট ও যৌক্তিক কারণে নির্দিষ্ট কারো স্বাক্ষর পর্যবেক্ষণ করতে চায়, সেক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মনোনীত বিশেষজ্ঞ বা মনোনীত ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে তা দেখানো যেতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক জসীম উদ্দিন, রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক গোলাম রব্বানী ও প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।