বাসস
  ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:৩০

ইন্দো-প্যাসিফিক এন্ডেভার : জলবায়ু নিরাপত্তা ও জ্বালানি স্থিতিস্থাপকতা সেমিনার সমাপ্ত

ঢাকা, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ইন্দো-প্যাসিফিক এন্ডেভার (আইপিই)-২০২৫ প্রথম পর্যায়ের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে জলবায়ু নিরাপত্তা ও জ্বালানি স্থিতিস্থাপকতা বিষয়ক সেমিনার শেষ হয়েছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্স এবং বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ইন্দো-প্যাসিফিক এন্ডেভার (আইপিই)-২০২৫ এর প্রথম পর্যায়ের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ‘জলবায়ু নিরাপত্তা ও জ্বালানি স্থিতিস্থাপকতা’ বিষয়ক সেমিনারের সমাপনী অনুষ্ঠান আজ ঢাকার কুর্মিটোলায় অবস্থিত বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বীর উত্তম এ কে খন্দকার-এ অনুষ্ঠিত হয়। 

এ সেমিনারের মূল লক্ষ্য ছিল প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ এবং জ্বালানি ব্যবস্থাপনায় স্থায়িত্বশীল কৌশল নির্ধারণ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (পরিচালন) এয়ার ভাইস মার্শাল জাভেদ তানভীর খান। তিনি তার বক্তব্যে জলবায়ু পরিবর্তনকে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম বড় নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি সংকট কেবল পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ নয়, বরং জাতীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী আধুনিক প্রযুক্তি, সাস্টেইনেবল এভিয়েশন ফুয়েল এবং জ্বালানি স্থিতিস্থাপকতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করছে।’

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকায় নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাই কমিশনার সুসান রাইল। তিনি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই ধরনের কার্যক্রমকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন। 

হাই কমিশনার বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা দিন-দিন গভীর হচ্ছে। জলবায়ু নিরাপত্তা ও জ্বালানি স্থিতিস্থাপকতা বিষয়ক এ ধরনের সেমিনার দুই দেশের অংশীদারিত্বকে নতুন মাত্রা প্রদান করবে।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বীর উত্তম এ কে খন্দকার-এর এয়ার অধিনায়ক, সশস্ত্র বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

সেমিনারের কারিগরি অধিবেশনগুলোতে বিশেষজ্ঞরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, সামরিক কার্যক্রমে পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ব্যবহার, প্রতিরক্ষা খাতে সাস্টেইনেবল এভিয়েশন ফুয়েল (এসএএফ) প্রয়োগের সম্ভাবনা, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধি, নীতিগত পদক্ষেপ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। 

বক্তারা উল্লেখ করেন যে, জলবায়ু পরিবর্তন থেকে উদ্ভূত ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রতিরক্ষা খাতকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহারকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

এ আলোচনার মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা সামরিক ও বেসামরিক বিমান চলাচল খাতে জ্বালানি স্থিতিস্থাপকতা বাড়ানোর নতুন ধারণা ও কার্যকর কৌশল তুলে ধরেন।

বিশেষত ভবিষ্যতের সামরিক অভিযানে টেকসই জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশগত প্রভাব কমানোর বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আলোচিত হয়।

এই সেমিনারের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী কেবল নিজেদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেনি, বরং আঞ্চলিক সহযোগিতা, উদ্ভাবনী প্রযুক্তি গ্রহণ এবং বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুসরণের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে।

সেমিনারটি বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া, আস্থা ও সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় দুই দেশের যৌথ প্রচেষ্টাকে আরও সুসংহত করবে।