বাসস
  ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০১

চলমান হামলার ঘটনা গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়া অনিশ্চিত করার ষড়যন্ত্র : বিএনপি

আজ শুক্রবার  রাতে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক শেষে দলের পক্ষ থেকে এমন প্রতিক্রিয়া জানান, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : বাসস

ঢাকা, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ (বাসস) : ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে দেশে চলমান হামলার ঘটনাকে গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়াকে অনিশ্চিত করার ষড়যন্ত্র অভিহিত করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি বলেছে, এসব ঘটনা প্রমাণ করে একটি পুরোনো চিহ্নিত মহল দেশকে পরিকল্পিতভাবে নৈরাজ্যের পথে ধাবিত করতে চায়।

আজ শুক্রবার রাতে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক শেষে দলের পক্ষ থেকে এমন প্রতিক্রিয়া জানান, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির জরুরি সভায় সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এবং ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদের অজুহাতে দেশব্যাপী নৈরাজ্যের চিত্র তুলে ধরা হয়।

লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে প্রতিবাদে দেশের সব দল প্রতিবাদ জানিয়ে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করে চলেছে। এরূপ পরিস্থিতিতে চলমান এ ধরনের ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা আগামী জাতীয় নির্বাচন তথা গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়াকে অনিশ্চিত করার ষড়যন্ত্র বলে মনে করে বিএনপি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অকালে মৃত্যুবরণ করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। কাপুরুষোচিত এই হত্যাকাণ্ডের আমরা তীব্র ঘৃণা ও নিন্দা জানাচ্ছি। অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের জন্য আমরা আবারও দাবি জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, এই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মাঝরাতে দৈনিক প্রথম আলো ও ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারসহ কয়েকটি দৈনিক পত্রিকার কার্যালয়ে একদল উচ্ছৃঙ্খল মানুষ অগ্নিসংযোগ করেছে। কর্মরত সাংবাদিকদের জীবন-মৃত্যুর ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নিউ এজের সম্পাদক ফ্যাসিবাদবিরোধী জুলাই আন্দোলনসহ দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম সাহসী ব্যাক্তিত্ব দেশবরেণ্য সাংবাদিক নুরুল কবিরের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। ছায়ানটসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানেও হামলা করা হয়েছে। আমরা এই ঘৃণ্য ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ও ঘৃণা প্রকাশ করছি।

অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের ভোটাধিকার তথা গণতান্ত্রিক অধিকারকে তারা নস্যাৎ করে দেশে ফ্যাসিবাদের একটি নতুন সংস্করণ তৈরি করতে চাচ্ছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের নাকের ডগাতেই তারা এই তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণও মনে করে সরকারের ভূমিকা সন্তোষজনক নয়। ফলে দেশ-বিদেশে সরকার তথা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়ে চলেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, শান্তিকামী দেশবাসীর পক্ষ থেকে এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রকারীদের আমরা হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, এত রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের দেশকে আমরা ধ্বংস হতে দেবো না। এই অপশক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে নৈরাজ্যবিরোধী সব রাজনৈতিক সামাজিক শক্তির আজ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। যে ঐক্যের মাধ্যমে আমরা ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও জাতীয় নির্বাচন আদায় করেছি, তারই ধারাবাহিকতাতে আমরা সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে আজ আবারও ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানাই।