বাসস
  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:০৭

রাকসু নির্বাচনে হাতে ভোট গণনাসহ ছাত্রদলের ৬ দাবি

ছবি: বাসস

রাজশাহী, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে ডিজিটাল কারচুপি প্রতিরোধে হাতে ভোট গণনাসহ ছয়টি দাবি জানিয়েছে ছাত্রদল।

আজ বুধবার দুপুরে রাকসু’র কোষাধ্যক্ষ কার্যালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দেন ছাত্রদল মনোনীত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের প্রার্থীরা। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের নেতারা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। এদিকে, বেলা দেড়টার দিকে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে তারা ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ছাত্রদলের অন্য দাবিগুলো হলো, ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে; ভুয়া ও জাল ভোট শনাক্তে বাধ্যতামূলক ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে হবে; ভোট গ্রহণের সময় ভোট প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত বৈধ কার্ড বা পাসধারী ব্যতীত কাউকে ভোটকেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে ঢুকতে দেওয়া যাবে না, সেজন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করতে হবে; লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় রাখতে নির্বাচনে অবৈধ কালো টাকার প্রভাব রুখতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া এবং সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে সব প্রার্থীর জন্য একই আচরণ বিধিমালা মেনে চলার বিষয়টি নজরদারি করতে হবে।

ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন (আবির) বলেন, ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে (হাতে) ভোট গণনা করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। কিন্তু জনবল বাড়ালে সময় কমানো সম্ভব। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যথেষ্ট জনবল আছে। ম্যানুয়ালি ভোট গণনা না করলে ছাত্রদল ভোট বর্জন করবে কিনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘এটা পরিস্থিতিই বলে দেবে। আমরা চাচ্ছি না ভোট বর্জন করতে। আমরা চাচ্ছি, ভোট সঠিকভাবে হোক।’

শেখ নূর উদ্দিন আরো বলেন, ‘এই দাবিগুলো শুধু ছাত্রদলের নয়। এটা আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেই জানিয়েছি। আমরা ওয়ার্নিং দিয়ে বলতে চাই, আমাদের দাবিগুলো মেনে নিন। তা না হলে ছাত্রদল না; সাধারণ শিক্ষার্থীরাই আপনাদের (নির্বাচন কমিশন) নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে।’ 

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের নেতারা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করেন। ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল আলীম বলেন, ‘ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি ছিল। এই নির্বাচনটা যাতে গ্রহণযোগ্য হয়, সেজন্য আমরা কিছু পরামর্শ দিয়েছি।’

ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম, এই নির্বাচনটা যেন পিছিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। এই জায়গায় ছোট্ট একটা কষ্ট আছে। এই নির্বাচনটা আরেকটু পিছিয়ে দিলে আরো সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হতো।

এদিকে নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মো. সেতাউর রহমান বলেন, ‘আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা কারো দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নয়। আমাদের নিজস্ব জায়গা থেকে ব্যবস্থা করা সম্ভব কি না, সেই জায়গাগুলো আমরা বিচার-বিশ্লেষণ করেছি। তারপর আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

ছাত্রদলের দাবির বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদল যেসব দাবি-দাওয়া দিয়েছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি দাবি ছাড়া বাকিগুলোর বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ভেবে দেখবে। এই যুগে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গণনা অনেক দুরূহ ব্যাপার।  জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা সেটা দেখেছেন। রাকসু নির্বাচন তারা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ দেখতে চান। সেভাবেই তারা বাকি পাঁচটা দাবি উত্থাপন করেছেন। তাদের ওই দাবিগুলোর ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত আন্তরিক।