বাসস
  ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:৫৩

তিন জেলায় দুদকের অভিযান: সেতু, স্কুল ভবন ও স্বাস্থ্যসেবায় অনিয়ম উদ্‌ঘাটন

ঢাকা, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): দেশের বিভিন্ন স্থানে সেতু ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণ এবং স্বাস্থ্যসেবায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তিনটি পৃথক এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালিয়েছে। অভিযানে সরেজমিন পরিদর্শন, নথি যাচাই ও তদন্তের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

নবাবগঞ্জের ইছামতী নদীর উপর ২৭০ মিটার দৈর্ঘ্যের ব্রিজ নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক, জেলা কার্যালয় ঢাকা-২ থেকে এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান চালানো হয়। টিম প্রথমে ঢাকার আগারগাঁওয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে গিয়ে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র পর্যালোচনা করে। এরপর নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা এলাকায় সরেজমিনে পরিদর্শন করে ব্রিজ নির্মাণ এলাকা ঘুরে দেখেন।

পরিদর্শনের সময় দেখা যায়, ব্রিজের ৯টি স্প্যানের মধ্যে ৮টির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলেও আর্চ স্প্যানের কাজ এখনও বাকি। কিন্তু অফিসে সংরক্ষিত ব্রিজের অগ্রগতি সংক্রান্ত নথিতে ৯৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন দেখানো হয়েছে এবং প্রায় ৫০ কোটি ৮৪ লাখ ২৯ হাজার ৭৭ টাকা বিল ইতিমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, সেতুর কাজ পুরোপুরি শেষ না হলেও বিল পরিশোধ করা হয়েছে, যা অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করে। 

এদিকে দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে পরিচালিত আরেক অভিযানে রাজধানীর মিরপুরের গাবতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬ তলা ফাউন্ডেশনসহ ৬ তলা ভবন নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়ম ধরা পড়ে। 

টিম সরেজমিনে পরিদর্শন করলে দেখা যায়, ভবনের মাত্র ২টি ফ্লোরের কাজ সম্পন্ন হয়েছে, তবে ঠিকাদারকে ৪টি ফ্লোরের বিল দেয়া হয়ে গেছে। অভিযানের সময় প্রকল্প সংক্রান্ত আংশিক রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়। অবশিষ্ট রেকর্ডপত্র যাচাই শেষে টিম কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।

এ ছাড়া নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা প্রদানে হয়রানি ও নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় অভিযান চালায়। টিম ছদ্মবেশে হাসপাতালে গিয়ে রোগীদের পর্যবেক্ষণ করে। দেখা যায়, হাসপাতালের পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ থাকলেও রোগীদের তা সরবরাহ করা হচ্ছে না এবং বাইরে থেকে কিনে আনতে বলা হচ্ছে।

এছাড়া, ওষুধ মজুদের তালিকা জনসমক্ষে প্রদর্শনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও হালনাগাদ তালিকা পাওয়া যায়নি। রোগীদের জন্য সরবরাহকৃত রান্না করা মাংসের ওজনও ৯০ গ্রামের পরিবর্তে ৪০-৫০ গ্রাম পাওয়া গেছে। অভিযানকালে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পরামর্শ দেয়া হয়।

দুদক জানিয়েছে, এই তিনটি অভিযানের পূর্ণাঙ্গ তথ্য ও নথি যাচাই শেষে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশন বরাবর দাখিল করা হবে।