বাসস
  ২৮ জুন ২০২৫, ০০:২০

অচিরেই দেশের সকল ইসলামী শক্তির মধ্যে সমঝোতা হতে যাচ্ছে: জামায়াত সেক্রেটারি

ঢাকা, ২৭ জুন ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, দেশের ইসলামিক পণ্ডিতত ও আলেম উলামা বুঝতে সক্ষম হয়েছেন যে, এবারের নির্বাচনে সকল ইসলামী শক্তির মধ্যে একটা নির্বাচনী ঐক্য থাকতে হবে। সেই লক্ষ্যে তারা কাজ করছেন এবং আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমাদের মধ্যে অচিরেই একটা সমঝোতা হতে যাচ্ছে ইনশাআল্লাহ। এই ইসলামী শক্তির ধারাকে অক্ষুণ্ন রেখে সকল আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আমাদের দেশপ্রেম, জাতিসত্তা, ইসলামী মূল্যবোধ, হাজারো শহীদদের আকাঙ্ক্ষা, প্রিয় শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ যারা ফাঁসিতে ঝুলে শাহাদাতাদের পিয়ালা পান করলেন, যারা নতুন বাংলাদেশ দেখে যেতে পারেননি, তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ই হচ্ছে তাদের ঋণ পরিশোধের একমাত্র উপায়। আসুন আমরা এই তারবিয়াতি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের মান সকল দিক দিয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নিয়ে যাই এবং তৃণমূল সংগঠনকে মডেল সংগঠনে পরিণত করার সকল শর্ত পূরণের অঙ্গীকার করি। 

গতকাল বৃহস্পতি ও আজ শুক্রবার দুই দিনব্যাপী মগবাজারস্থ আল-ফালাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত উপজেলা/থানা আমিরদের শিক্ষা শিবিরের দ্বিতীয় দিনের বক্তব্যে সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এ সব কথা বলেন। 

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য আবদুর রবের সভাপতিত্বে এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত শিক্ষা শিবিরে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা পেশ করেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম, সাইফুল আলম খান মিলন ও মোবারক হোসাইন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. খলিলুর রহমান মাদানী ও ড. অধ্যাপক আবদুস সামাদ।

এসময় অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমাদের সংগঠনের একটা ভিশন হল জনমতকে ইসলামের অনুকূলে নিয়ে আসা। আর দেশ পরিচালনার জন্য যোগ্য লোক তৈরি করা। এই কাজের মাধ্যমে আমরা দ্বীনের বিজয় দেখব, মহান রব খুশি হবেন আর আমাদের ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতবাসী করবেন ইনশাআল্লাহ। এটাই আমাদের ভিশন। এই লক্ষ্য অর্জনের সুযোগ আজ আমাদের সামনে তৈরি হয়েছে। আসুন আমরা জনসেবার মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে পৌঁছে যাই। মানুষকে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করি। আল্লাহ যদি আমাদেরকে সরকার গঠনের সুযোগ দেন, তাহলে দেশ পরিচালনার যোগ্য লোক আমাদের রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এতবড় একটা পরিবর্তনের পর একটা নতুন মানবিক বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন তৈরি হয়েছে, তা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে পূরণ করতে হবে। এই স্বপ্ন পূরণে জামায়াত  আমির ডা. শফিকুর রহমান জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। 

জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর আজ দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংস্কার ও ফ্যাসিস্টদের বিচার দৃশ্যমান করে আমাদেরকে এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। 

উপস্থিত নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, একটি মজবুত বা শক্তিশালী সংগঠনের কেন্দ্রবিন্দু হলো ইউনিট। মানবদেহের সকল অঙ্গের মধ্যে হার্ট যেমন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি একটি মজবুত সংগঠনের প্রাণ বা হৃদপিণ্ড হলো তৃণমূল অর্থাৎ ইউনিট সংগঠন। কারণ এখানেই কর্মী তৈরি, রুকন তৈরি হয়, এখান থেকেই মিছিলে লোক আসে, বায়তুলমাল আসে এবং ভোটও পাওয়া যায়। ইউনিট যখন যথাযথ ফাংশন করে, তার প্রভাব সারাদেশের সংগঠনের ওপর গিয়ে পড়ে। 

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, আমাদের আগামী জাতীয় নির্বাচন কোনো দলের নয়। এই নির্বাচন হলো দেশি বিদেশি চক্রান্তের বিরুদ্ধে, আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে; যারা এ দেশ থেকে ইসলামী শক্তিকে নির্মূল করতে চায়, যারা দ্বীনের বিজয়কে রুখে দিতে চায় তাদের বিরুদ্ধে।