বাসস
  ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১:৫৫

শহীদ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ড: অভিযুক্ত ফয়সালের ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন

ঢাকা, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শহীদ শরীফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার বেশি অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণের পর প্রাথমিকভাবে এ তথ্য পাওয়া যায়। এ ঘটনায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অর্থ পাচার সংক্রান্ত পৃথক অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডি।

সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আবু তালেব স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ওসমান হাদি মাথায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার পরপরই সিআইডি হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন দিক নিয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থলে ক্রাইমসিন ইউনিট মোতায়েন, সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ, গুলির খোসা উদ্ধার এবং আলামত ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ওরফে রাহুল এখনো গ্রেফতার না হলেও মামলার আলামত গোপন ও অভিযুক্তকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে তার পরিবারের সদস্যসহ একাধিক সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

অভিযানের সময় উদ্ধারকৃত বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, অভিযুক্ত ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে ইস্যুকৃত চেকগুলোতে বিপুল অঙ্কের অর্থের উল্লেখ রয়েছে। যদিও এসব চেকের চূড়ান্ত লেনদেন সম্পন্ন হয়নি, তবু সংশ্লিষ্ট রেকর্ডের সমষ্টিগত মূল্য প্রায় ২১৮ কোটি টাকা।

সিআইডির প্রাথমিক বিশ্লেষণে আরও উঠে আসে, অভিযুক্ত ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে সংঘটিত অস্বাভাবিক লেনদেন মানিলন্ডারিং, সংঘবদ্ধ অপরাধ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অর্থায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারে। এ কারণে অর্থ পাচার সংক্রান্ত অনুসন্ধান জোরদার করা হয়েছে।

এছাড়া অভিযুক্তদের ব্যাংক হিসাবে থাকা প্রায় ৬৫ লাখ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের পেছনে কোনো সংঘবদ্ধ নেটওয়ার্ক জড়িত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে সিআইডির একাধিক দল কাজ করছে।

মূল হোতাকে গ্রেফতার ও পুরো অপরাধচক্র উন্মোচনে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।