বাসস
  ২৬ জুন ২০২৫, ২১:৪১

রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের অভিযান

রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ফাইল ছবি

ঢাকা, ২৬ জুন, ২০২৫ (বাসস) : বাগেরহাট জেলার রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে বৈষম্য, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়ম এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিভিন্ন মালামাল লুটপাট করে বিক্রয়সহ নানাবিধ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির আহমেদ জানান, বাগেরহাট জেলা কার্যালয় থেকে আজ এই এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে এনফোর্সমেন্ট টিম সরেজমিনে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করে। পর্যালোচনায় দেখা যায়, ভারতীয় প্রতিষ্ঠান এনটিপিসি কর্তৃক একতরফাভাবে প্রণীত নীতিমালা অনুসারে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিয়োগ ও সুযোগ সুবিধা প্রদান সংক্রান্ত চুক্তি সম্পাদিত হয়, ফলে দেশীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্ষেত্রে বৈষম্যজনিত ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।  

বিদ্যমান আইনে প্রতি ১ জন বিদেশি কর্মকর্তার বিপরীতে ২০ জন দেশি কর্মকর্তা নিয়োগের বিধান থাকলেও, দেশীয় জনবলের সক্ষমতা না থাকার অজুহাতে ওই নিয়ম লঙ্ঘন করার প্রাথমিক প্রমাণ পায় দুদক টিম। এছাড়া, বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিভিন্ন ধাতব সামগ্রী (লোহা, তামার তার, সিসা ইত্যাদি) লুটপাট ও বিক্রয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে টিম জানতে পারে, যার কিছু ঘটনায় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে জানা যায়। এছাড়াও অভিযানকালে কয়লা আমদানিতে অনিয়ম, মিথ্যা মেডিকেল বিল দাখিলসহ অন্যান্য দুর্নীতির বিষয়েও প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। 

এদিকে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা প্রদানে অনিয়ম ও হয়রানিসহ নানাবিধ অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের কিশোরগঞ্জ জেলা কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট টিম আজ সরেজমিনে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে টিম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় পরিদর্শন করে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করে। 

রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ অপ্রতুল থাকায় নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি; যার ফলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণের ফলে রোগীরা তীব্র দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এ বিষয়ে পুনঃবরাদ্দের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ বরাবর চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে বলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ দুদক টিমকে অবহিত করে। টিম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিকৃত রোগী ও আগত সেবাগ্রহীতাদের সাথে কথা বলে সেবার মান ও কার্যক্রম সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে। অভিযানের সময় বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে গাফিলতির পাশাপাশি সেবা কার্যক্রমের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করা হয় এবং প্রাপ্ত অনিয়মসমূহ অবিলম্বে দূরীকরণের জন্য পরামর্শ প্রদান করা হয়। 

এ ছাড়া সিলেট জেলার সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কের সংস্কার কাজে নিম্নমান, দীর্ঘসূত্রিতা ও নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের সিলেট সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। 

অভিযানে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী, উপজেলা প্রকৌশলী, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে রাস্তার প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনে দেখা যায়, ১০ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে ডিসিএল ও এমডিএইচ নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হলেও নির্ধারিত সময়সীমা কয়েক দফায় বাড়ানো হয় এবং দাবি অনুযায়ী ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন দেখানো হলেও বাস্তবে ৫০ শতাংশেরও কম কাজ হয়েছে।  পাশাপাশি প্রকল্পের ১ হাজার ৩০০ মিটার সড়ক স্কিমে অন্তর্ভুক্ত না করায় বড় ধরনের অনিয়মের বিষয়টি স্পষ্ট হয়। এছাড়া নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারেরও প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়।