শিরোনাম
ঢাকা, ২৫ জুন ২০২৫ (বাসস): জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং ওআইসিসহ সকল শান্তিকামী সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বের নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের পক্ষে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ২৬ জুন ‘নির্যাতনের শিকারদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে মিয়া গোলাম পরওয়ার আজ এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “পতিত ফ্যাসিবাদী সরকার বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ দেশের সাধারণ নাগরিকদের ওপর নানাভাবে জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছিল। ভিন্নমতের মানুষদের গ্রেফতার করে বিনা বিচারে বছরের পর বছর কারাগারে আটক করে রাখে। বিরোধীদলের হাজার হাজার নেতাকর্মী, আলেম-ওলামা, সাংবাদিক, আইনজীবী, বুদ্ধিজীবীকে গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে বন্দি করে রেখে হয়রানি করেছে।'
তিনি বলেন, 'স্বৈরশাসক হাসিনার অগণতান্ত্রিক এবং ইসলাম ও দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করায় হামলা-মামলা দিয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় বিরোধীদল সরকারের বৈধ সমালোচনা করবে, ত্রুটিবিচ্যুতি ধরিয়ে দেবে এবং জনগণকে সচেতন করবে এটাই স্বাভাবিক। সরকার যদি বিরোধীদলের ইতিবাচক সমালোচনা সহ্য করতে না পারে তাহলে বুঝতে হবে সেটি গণতান্ত্রিক সরকার নয়। সেটি হলো স্বৈরাচারী ও জালিম সরকার। দুঃখজনকভাবে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার ছিল এমনই একটি জালিম সরকার।'
তিনি আরও বলেন, 'পতিত সরকারের আমলে দেশে গুম, খুন, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণ ব্যাপকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। তাদের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে শিকার হয়েছে বহু মানুষ। সীমাহীন শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে অনেক নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। কারণে অকারণে বহু মানুষকে গুম ও খুন করা হয়েছে। হাজার হাজার নারী-শিশু ধর্ষিত হয়েছে। গত জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রায় ২ হাজার মানুষকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। সারা জীবনের জন্য পঙ্গু করা হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার নিরীহ মানুষকে। হাজার হাজার মানুষ আহত হয়ে এখনো হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন।'
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন,'দেশের সাধারণ মানুষের জানমালের কোনো নিরাপত্তা এবং বাকস্বাধীনতা বলতে কিছু ছিল না। সাইবার নিরাপত্তা আইনের নামে সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ করা হয়েছিল। কথায় কথায় তাদেরকে গ্রেফতার করে জেলে আটক করে রেখেছিল। ঘুষ-দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির মাধ্যমে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দিয়েছিল।'
তিনি বলেন,' জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত ‘নির্যাতনের শিকারদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের শোষিত-নির্যাতিত ব্যক্তি, গোষ্ঠী, সংগঠন ও সম্প্রদায়ের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা। যুগের পর যুগ মানুষ নিষ্ঠুর ও নির্দয়ভাবে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নির্যাতিত হয়েছে। বর্তমান সভ্য আধুনিক যুগেও বিশ্বব্যাপী সংঘাত-সংঘর্ষ জিইয়ে রেখে সাধারণ মানুষের উপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। গাজাসহ ফিলিস্তিনে হাজার হাজার নারী-শিশুসহ নিরপরাধ ও নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। অতি সম্প্রতি ইরানে মিথ্যা অভিযোগ জানমালের ক্ষতি সাধন করা হচ্ছে। ফিলিস্তিন ও মধ্যপ্রাচ্যসহ সারা বিশ্বে আদম সন্তানের উপর চালানো নিষ্ঠুর জুলুম-নির্যাতন অচিরেই বন্ধ হওয়া উচিত।'
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, পতিত সরকারের আমলে গ্রেফতার হওয়া বিরোধী দলের যেসব নেতাকর্মী, সাংবাদিক, আলেমসহ এখনো আটক আছেন তাদের সকলকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য আমি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।'