শিরোনাম
খুলনা, ১১ জুন, ২০২৫ (বাসস): ঈদুল আযহার ছুটিতে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান ষাটগম্বুজ মসজিদে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিপুল সংখ্যক পর্যটক ভিড় জমিয়েছেন।
সুন্দরবনে তিন মাসের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে, দর্শনার্থীরা তাদের ঈদের ছুটি উপভোগ করার জন্য আশপাশের অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্র ও পর্যটন স্থানগুলো পছন্দ করেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কর্মকর্তারা পর্যটকদের বিশাল ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নারী ও শিশুসহ সকল বয়সের মানুষ অবসরের জন্য মসজিদ প্রাঙ্গণে ভিড় করছেন।
ইসলামি ঐতিহ্যের এই স্থাপনা দেখার জন্য অনেক দর্শনার্থী তাদের পরিবারের সদস্যদেরও সঙ্গে নিয়ে এসেছেন।
ঐতিহাসিক এই স্থান পরিদর্শনের সময় দর্শনার্থীরা আনন্দ প্রকাশ করেন।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তথ্য অনুসারে, গত তিন দিনে ১০ হাজারেরও বেশি পর্যটক মসজিদটি পরিদর্শন করেন, যার ফলে ২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।
হজরত খান জাহান আলী (রহ.) এর মাজার, মুনিগঞ্জের ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ, সাংস্কৃতিক স্থান, দড়াটানা সেতু ও শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা রিভার ভিউ ইকো পার্কের মতো পার্শ্ববর্তী পর্যটন স্থানগুলোও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
দর্শনার্থীরা ষাটগম্বুজ মসজিদের স্থাপত্য সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি তারা বাগেরহাট জাদুঘরটি ঘুরে দেখছেন, যেখানে খান জাহান আলী (রহ.) কর্তৃক ব্যবহৃত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো প্রদর্শিত হচ্ছে।
অনেক পর্যটক ৬৫০ বছরেরও বেশি পুরোনো এই ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার ছবি তুলেছেন।
সেখানে জেলা পুলিশের সহায়তায় টুরিস্ট পুলিশ বিশাল জনতার নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করছে। দর্শনার্থীরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
মোকাম্মেল হোসেন ও তার স্ত্রী কুমিল্লা থেকে এখানে এসেছেন।
তিনি বাসসকে বলেন, গত দুই বছর ধরে তারা ঈদের সময় কোথাও ভ্রমণ করতে পারেননি।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আমাদের বাবা-মায়ের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে ঈদ উদ্যাপন করেছি এবং এই বছর আমি ও আমার স্ত্রী এখানে ষাটগম্বুজ মসজিদ দেখতে আসতে পেরেছি।
তিনি আরও বলেন, ‘এটি একটি দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা।’
বরিশাল থেকে পরিবারের ছয় সদস্য নিয়ে আসা আরিফুল ইসলাম বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ষাটগম্বুজ মসজিদ পরিদর্শনের ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন এবং অবশেষে এই ঈদের ছুটিতে তিনি এখানে আসতে পেরেছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘ইসলামের ইতিহাসের এটি একটি অবিশ্বাস্য নিদর্শন। আমার পুরো পরিবার মসজিদের সৌন্দর্য দেখে রোমাঞ্চিত হয়েছে। ঈদে এখানে সময় কাটানো সত্যিই আনন্দের। আমরা এই ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভের সৌন্দর্য বিশ্বের অন্যান্যের সাথে শেয়ার করতে চাই।’
সাতক্ষীরা থেকে আসা আরেক দর্শনার্থী আরিফা ইয়াসমিন জানান, তিনি তার দুই সন্তানকে নিয়ে এসেছেন। মসজিদটি দেখার পর তারা রাইড উপভোগ করেছেন এবং দারুণ সময় কাটিয়েছেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশের বাগেরহাট জোনের ওসি মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, পর্যটন পুলিশ দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে জেলা পুলিশ পর্যটন পুলিশকে সহায়তা করছে।
বাগেরহাটের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ জায়েদ বলেন, প্রতি বছর ঈদের সময় এখানে প্রচুর সংখ্যক দর্শনার্থী আসেন।
তিনি আরো বলেন, এবার টানা ১০ দিন ঈদের ছুটি থাকাতে পর্যটকরা দূর-দূরান্তের পর্যটন স্থানগুলো ঘুরে দেখতে পারছেন।