বাসস
  ০১ জুন ২০২৫, ১৭:১৮

বিএনপি ছাড়াও ৫২টি রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায়: ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন 

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ছবি : বাসস

ঢাকা, ১ জুন, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, শুধু বিএনপি নয়, দেশের ৫২টি রাজনৈতিক দল চলতি বছরের ডিসেম্বরেই সংসদ নির্বাচন চায়। কারণ নির্বাচন ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হলে নির্বাচন কমিশনের সুবিধা, সরকারেরও সুবিধা, জনগণেরও সুবিধা। তবে অন্য কোনো যুক্তি থাকলে সরকারকে তা পরিষ্কার  করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আহ্বান জানান বিএনপির এই প্রবীণ নেতা।

আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত এক  আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। 

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা আরও বলেন, জাতীয় পত্রিকায় লেখা হয়েছে ৫২টি দল একত্রিত হয়ে নির্বাচন ডিসেম্বরে চায় এবং সে দলগুলোর নাম, নেতাদের নাম, তাদের বক্তব্য পত্রিকায় প্রকাশিত  হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আগামীকালের বৈঠক প্রসঙ্গে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আগামীকাল দ্বিতীয় দফা বৈঠক ডেকেছেন। আমরা যাব। গেলেও আমরা কি বলব? আমরা তো আগেই সংস্কার কর্মসূচি দিয়ে রেখেছি। আমাদের দেয়া সংস্কার কর্মসূচির অনেকাংশ তাদের প্রস্তাবের সাথে মিলে।

ড. মোশাররফ বলেন, বাংলাদেশে যে সংকট-আলোচনা এটা কিন্তু নির্বাচনকে নিয়ে। প্রধান উপদেষ্টা অত্যন্ত সম্মানিত একজন ব্যক্তি, আন্তর্জাতিকভাবে  যিনি সুপরিচিত। তিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। আমরা দেশের জনগণ এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র গণ-আন্দোলনের যারা নেতৃত্ব দিয়েছে সবাই মিলে অনেক বিশ্বাস নিয়ে তাকে এই পদে (প্রধান উপদেষ্টা) পদে বসিয়েছি।

তিনি বলেন, কিন্তু তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) জাপানে গিয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন এতে আমরা হতাশ। কেনো না তিনি বলেছেন, একমাত্র  বাংলাদেশে বিএনপি নাকি ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়? আমি বলছি, কে নির্বাচন চায় না? নির্বাচন সবাই চায়।

জুনে নির্বাচন সম্ভব নয় উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, নির্বাচন যত বিলম্ব হবে পতিত স্বৈরাচার ততো বেশি ষড়যন্ত্র করবে। ডিসেম্বরে নির্বাচন প্রয়োজন।

আপনারা  বলছেন জুনে নির্বাচন দেবেন। এর আগে কী হয়? ডিসেম্বরের পর জানুয়ারি মাস, এরপরে ফেব্রুয়ারি মাসে রোজা, এই রোজাকে তো আমরা পিছিয়ে দিতে পারব না। রোজা ও ঈদ নিয়ে দুই মাস চলে যায়। এরপর ফেব্রুয়ারি-মার্চ। তারপরে আসবে এপ্রিল-মে এসএসসি ও এইচএসসি পাবলিক পরীক্ষা, এগুলো পেছানোর সুযোগ নেই। 

তিনি বলেন, এসব পাবলিক পরীক্ষায় যে-সব স্কুল-কলেজে সেন্টার হয় সেগুলোতে কিন্তু ভোটের সেন্টার হয়। সরকার এপ্রিল-মে মাসে নির্বাচন করতেই পারবেন না। আর জুন মাসে পুরোপুরি বর্ষাকাল চলে আসে। এবার তো দেখলাম মে মাসে কি পরিমাণ বৃষ্টি এবং সারাদেশে বর্ষা অবস্থা। জুন মাসে নির্বাচন সম্ভব না। তাই আমরা মনে করি ডিসেম্বরে নির্বাচন সম্ভব এবং আমরা দাবি করেছি যে, আপনি ডিসেম্বরের মধ্যে যেদিন সুইটেবল মনে করেন, সেদিন আপনারা ঘোষণা করেন।

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের আ ন হ আখতার হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল একেএম শামসুল ইসলাম শামস, এমবিএ অ্যাসোসিয়েশনের সৈয়দ আলমগীর, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সেলিম ভুঁইয়া, জাকির হোসেন, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জল, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের শামীমুর রহমান শামীম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একেএম মহসিন, রাশেদুল হক, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের অ্যাডভোকেট আবেদ রেজা, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের ফখরুল আলম, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাইফুজ্জামান সান্টু, ডিপ্লোমা এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের জিয়াউল হায়দার পলাশ, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের জাহানারা বেগম, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের এ কে এম মুসা, ফিজিওথেরাপিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের তানভীরুল আলম, ইউনানি আয়ুর্বেদিক গ্র্যাজুয়েট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের মির্জা লুৎফুর রহমান লিটন প্রমুখ বক্তব্য দেন।